শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নওগাঁয় ৬ হাজার হেক্টর জমি পানির নিচে

রহিদুল ইসলাম রাইপ, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ অতিবর্ষণ ও সম্প্রতি হয়ে যাওয়া ৩ বারের বন্যার পানিতে নওগাঁর আত্রাই উপজেলার প্রতিটি মাঠে মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি পড়ে রয়েছে।

এসব জমিতে চলতি মৌসুমে আমন চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ফলে কৃষকদের মাঝে দেখা দিয়েছে হতাশার ছাপ। উপজেলার প্রতিটি এলাকার কৃষকদের আমন ধানের বীজতলা পানির নিচে ডুবে যাওয়ায় আমনের চারা উৎপাদন করতে না পারায় উপজেলার অধিকাংশ এলাকার কৃষকরা বর্তমানে আমন ধানের চারা সংকটে ভুগছেন।

জানা যায়, উপজেলার শাহাগোলা, কালিকাপুর, কাশিমপুর, ভোঁপাড়া, জামগ্রাম, মনিয়ারী, নওদুলী, পালশা, চৌথলসহ পূর্ব এলাকার মাঠগুলো আমন চাষের জন্য বিখ্যাত। এসব এলাকার কৃষকরা বোরো ধান ঘরে তোলার পর পরই আমনের বীজতলা তৈরীতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এলাকা জুড়ে চিনি আতপ, জিরাসাইল, পাইজামসহ বিভিন্ন জাতের আমন ধানের আবাদ করে থাকেন।

কিন্তু এবারে বোরো ধান কাটা শেষ হতে না হতেই অতি বর্ষণ এবং নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে প্রতিটি মাঠে বন্যার পানি ঢুকে জলাদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে আমন ধানের চাষ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৮ ইউনিয়নে প্রায় ৬ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়। এর মধ্যে মনিয়ারী, ভোঁপাড়া ও শাহাগোলা ইউনিয়নে সর্বাধিক পরিমাণ জমিতে আমন চাষ করা হয়। গত বছর আমন চাষের মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে চিনি আতপ ধানের চাষ হয়েছিল। এতে করে কৃষকরা ব্যাপক লাভবানও হয়েছিল। এবারের আগাম বন্যার পানি মাঠে চলে আসায় আমন চাষ ব্যাহত হতে পারে।

উপজেলার উঁচল কাশিমপুর গ্রামের বেলাল হোসেন বলেন, আমাদের বোরো ধান কেটে শেষ না করতেই মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। মাঠ পানিতে ভরে গেছে, আমন ধানের আবাদ এবারে করা সম্ভব হবে না।

চৌথল গ্রামের কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, আমাদের এলাকার জমিগুলোতে যেমন বোরো চাষ হয়। তেমনি আমন ধানে চাষও ব্যাপক হয়ে থাকে। গতবার আমরা প্রচুর পরিমাণে চিনি আতপ ধানের চাষ করেছিলাম। তাতে ফলনও হয়েছিল ভাল। কিন্তু এবারে বীজতলা তৈরি করতেই পারলাম না। কিভাবে আমন চাষ করবো তা নিয়ে হতাশায় রয়েছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কে এম কাউছার হোসেন বলেন, হঠাৎ করে অতি বর্ষণের ফলে মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। নদীর পানি কিছুটা কমলে মাঠের পানিও কমে যাবে। আমরা আশা করছি মাঠে পানি নেমে গেলে কৃষকরা পুরোদমে আমন চাষ করতে পারবেন।

এই বিভাগের আরো খবর