শনিবার, ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মায়ের অত্যাচারে ৫ বছর রাস্তায় শিশু তারপর….

ডেস্ক নিউজ : ‘মা (সৎ মা) আমারে শুধু মা রে। আব্বা কিছু কয় না। দেখেন আমার শরীরে দাগ লাগি আছে। আমি ব্যথা পাই। আমি পুলিশের সঙ্গে থাকুম। পুলিশের চাকরি করুম। আর বাড়ি যামু না। আবার আমারে মারবো এ বলে বুক ফুলিয়ে কাঁদতে থাকে।’ঈদের দিন শনিবার বিকাল ৪টার দিকে লক্ষ্মীপুরের রায়পুর থানার ওসির সঙ্গে সাক্ষাতে গেলে শিশু সায়েম (৯) কেঁদে কেঁদে এসব কথা বলেছে। অসহায় শিশু সায়েম জেলার সদর উপজেলার পালেরহাটের মুক্তারামপুর গ্রামের কালু মিয়া ও মৃত কুলসুমার ছেলে। তার সৎ মা স্বপ্না বেগম।

পুলিশ জানান, প্রায় দেড় বছর বয়সে শিশু সায়েম তার মাকে হারান। তার কয় মাস পর সায়েমের বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎমা শিশু সায়েমকে সহ্য করতে না পেরে মানুষিক ও শারীরিক নির্যাতন করে। এছাড়াও অনাহারেও থাকতে হয় শিশুটিকে। দিনমজুর বাবা এসব দেখেও কিছুই বলার সাহস পায়নি। অবশেষে নিরুপায় সায়েম ৪ বছর বয়সে বাবার ঘর ছেড়ে বিভিন্নস্থানে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বুধবার রাতে সায়েম থানা মসজিদের সিঁড়ির সামনে ঘুমিয়ে ছিল। মসজিদের কয়েকজন মুসুল্লি সায়েমকে দেখে থানায় নিয়ে যান। রায়পুর থানার ওসি সদর থানার ওসির মাধ্যমে সায়েমকে নিয়ে যেতে তার বাবাকে সংবাদ দিলে সে আসেনি। কিন্তু সায়েম গত ৩ দিন পুলিশের আশ্রয় রয়েছে। পুলিশের ভালোবাসায় মুগ্ধ শিশুটি।

শিশু সায়েম বলে, ‘আমি থানা থাইক্কা কোনানো যামু না। পুলিশের কাছে থাকুম। আমিও বড় হয়ে পুলিশ হমু। স্যারেরা আমারে অনেক আদর করছে। বালা খাওন দিছে। বাড়ীতে গেলে আবার আমারে মারবো ‘মা’। আব্বা কিছু কয় না। আর বাড়ীতে যামু না।’ রায়পুর থানার ওসি আবদুল জলিল বলেন, গত তিন দিন ধরে মা হারা ৯ বছরের শিশু সায়েম আমার কাছে রয়েছে। তার বাবাকে সংবাদ দিলেও সে আসছে না। সৎ মায়ের অত্যাচারে শিশুটি চার বছর থেকে রাস্তায় ঘুরছে। ঈদের দিন আমাদের সঙ্গে আনন্দ করেছে শিশুটি। এসপির সঙ্গে কথা বলে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

এই বিভাগের আরো খবর