ডেস্ক নিউজ : বিশিষ্ট ভাস্কর মৃণাল হককে মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। আজ শনিবার বাদ আসর গুলশান কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে গুলশানের বাসা থেকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৬২ বছর।
ঢাকার সৌন্দর্য বর্ধণসহ দেশে-বিদেশে ভাস্কর্য নির্মাণ করে এই গুণীশিল্পী খ্যাতি ছড়িয়েছেন তাঁর নান্দনিক শিল্পকর্মে। বেশ কিছুদিন ধরেই শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন মৃণাল হক। তিনি ডায়াবেটিসসহ বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন বলেও জানা গেছে।
১৯৫৮ সালে রাজশাহীতে জন্ম নেওয়া এই ভাস্কর রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ থেকে এসএসসি এবং এইচএসসি শেষে ১৯৭৭ সালে ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটে। ১৯৯৫ সালে তিনি আমেরিকায় পাড়ি জমান এবং ভাস্কর হিসেবে সেখানেই কাজ শুরু করেন।
২০০২ সালে স্থায়ীভাবে দেশে ফিরে আসেন মৃণাল। ওই বছরেই তিনি নিজ উদ্যোগে নির্মাণ করেন মতিঝিলের ‘বক’ ভাস্কর্যটি। পরের বছর ২০০৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে নির্মিত ‘গোল্ডেন জুবিলি টাওয়ার’ তাঁরই শিল্পকর্ম।
রাজধানী সৌন্দর্যবর্ধনে মৃণাল হকের হাতের ছোঁয়া দেখা যায় ঢাকার মোড়ে মোড়ে।
হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল অর্থাৎ আগের শেরাটনের সামনে ‘রাজসিক’ ভাস্কর্যটিও মৃণাল হকের হাতে তৈরি। পাশেই পরীবাগে ‘জননী ও গর্বিত বর্ণমালা’, রাজারবাগ পুলিশ লাইনে ‘দুর্জয়’, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সামনে ‘রত্নদ্বীপ’, ইস্কাটনে ‘কোতোয়াল’, সাতরাস্তা মোড়ে ‘ময়ূর’, এয়ারপোর্ট গোল চত্বরের ভাস্কর্য, নৌসদর দপ্তরের সামনে ‘অতলান্তিকে বসতি’, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ের ভাস্কর্যসহ অসংখ্য শিল্পকর্মের নির্মাতা তিনি।
ঢাকার বাইরে, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বগুড়া, কক্সবাজার, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলার দৃষ্টিনন্দন ভাস্কর্যে আছে মৃণাল হকের হাতের ছোঁয়া।
তবে, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সামনে গ্রিক দেবী থেমিসের অনুকরণে ভাস্কর্য স্থাপন করে সমালোচনার মুখে পড়েন মৃণাল হক।
বেশ কিছু দিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন মৃণাল হক। ডায়াবেটিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি ভর্তি ছিলেন হাসপাতালে। গতকাল শুক্রবার রাতে সুগার লেভেল এবং অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায়। অবশেষে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।