ডেস্ক নিউজ : করোনা ভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ তাইওয়ানে তৈরি চিকিৎসা সরঞ্জাম উপহার হিসেবে গ্রহণ করায় দুঃখ পেয়েছে চীন। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে টেলিফোন করে নিজেদের মনোকষ্টের কথা জানিয়েছে চীন দূতাবাস। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঢাকা এক চীন নীতিতে বিশ্বাস করে। এখানে তাইওয়ানের সঙ্গে আলাদা আনুষ্ঠানিক যোগাযোগের কোনো বিষয় নেই।
সম্প্রতি বেসরকারি কোম্পানি ওয়ালটন তাইওয়ান-বাংলাদেশ চেম্বার এর মাধ্যমে চিকিৎসা সরঞ্জাম আনার ব্যবস্থা করে। ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসব সামগ্রী প্রদান করা হয়। সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, বাণিজ্য এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের তিন মন্ত্রী এবং তিন সচিব। তাইওয়ান এক্সটারনাল ট্রেড ডেভেলপমেন্ট কাউন্সিল নামে একটি প্রতিষ্ঠান এক লাখ সার্জিক্যাল মাস্ক, ১৬০০ এন-৯৫ মাস্ক, ২০ হাজার কাপড়ের মাস্ক, ১০ হাজার ফেস শিল্ড, পিপিই, গগলস, দুই সেট ভেন্টিলেটর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করে।
এরপরই চীনা দূতাবাস থেকে টেলিফোন করে মৌখিকভাবে বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায়। তারা পুরো বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ইত্তেফাককে বলেন, আমরা তাদের আশ্বস্ত করেছি যে, বাংলাদেশ এক চীন নীতিতে বিশ্বাস করে, সেই দৃষ্টিভঙ্গির কোনো পরিবর্তন হয়নি। করোনা মোকাবিলায় এসব চিকিত্সা সামগ্রী উপহার হিসেবে এসেছে। অন্য কিছু নয়। চীন আমাদের ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট। তাইওয়ানকে আলাদাভাবে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়ে কোনো চিন্তা-ভাবনা সরকারের নেই।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার ইত্তেফাক বলেন, আমরা মানবিক সহায়তা নিয়েছি, অন্য কিছু নয়। কয়েক মাস আগে ওয়ালটন তাইওয়ানে তৈরি চিকিত্সাসামগ্রী স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে উপহার হিসেবে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়। তখন দেশে করোনার প্রকোপ বেশি ছিল এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের প্রয়োজন ছিল। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে এসব সামগ্রী এসে পৌঁছে। এটা সম্পূর্ণ মানবিক সহায়তা। এখানে তাইওয়ানের সঙ্গে কোনো ব্যাবসায়িক সম্পর্ক নেই।
উল্লেখ্য, তাইওয়ানের সঙ্গে কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক যোগাযোগের বিষয়ে চীন বরাবরই স্পর্শকাতর। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর আকস্মিকভাবে ঢাকায় তাইওয়ানের কনস্যুলেট খোলা হয়। সেখানে সীমিত আকারে ভিসা কার্যক্রমও চলে। চীন এ বিষয়ে কড়া প্রতিবাদ ও আপত্তি জানায়। এ ঘটনায় বিএনপির সঙ্গে চীনের সম্পর্কের অবনতি হয়। এক পর্যায়ে সেই কনস্যুলেট অফিসটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ঢাকায় তাইওয়ানের একটি বাণিজ্যবিষয়ক অফিস চালু হয়। যেটি এখনো চালু রয়েছে।