ডেস্ক নিউজ : করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশের স্কুলগুলোতে এ বছর অ্যাসাইনমেন্ট ভিত্তিক মূল্যায়ন পদ্ধতি চালু করেছে সরকার। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে অ্যাসাইনমেন্টের উপর ভিত্তি করে। শিক্ষার্থীরা বাসায় বসে অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করে সেগুলো স্কুলে জমা দেবে। তবে অ্যাসাইনমেন্টের এই ধারণা স্কুলের শিক্ষার্থীদের কাছে একেবারেই নতুন।
একটি ভালো অ্যাসাইনমেন্ট লেখার জন্য অনেক শিক্ষার্থী এখন গলদঘর্ম হচ্ছে। ভালো অ্যাসাইনমেন্ট তৈরির জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কিছু নির্দেশনা দিয়েছে। সেগুলো অনুসরণ করলে একজন শিক্ষার্থী ভালো করতে পারবেন।
নিচে তার পাঁচটি উপায় তুলে ধরা হলো :
সৃজনশীলতা
যে অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করা হচ্ছে সেখানে যাতে শিক্ষার্থীদের মৌলিক চিন্তা এবং সৃজনশীলতার ছাপ থাকে। অন্যের লেখা থেকে কপি করলে সেখানে কাঙ্ক্ষিত মূল্যায়ন পাওয়া সম্ভব নয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শিক্ষার্থীরা যদি সৃজনশীলতা বাড়াতে চায় তাহলে পাঠ্যবইয়ের প্রতি ভালো করে মনোযোগ দিতে হবে। পাঠ্যবই বুঝে পড়তে হবে। এতে তাদের সৃজনশীলতা বাড়বে। নোট বা গাইডের উপর নির্ভর করলে সৃজনশীলতা তৈরি হয়না।
এছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে নোট বই, গাইড বই বা অন্য কারো লেখা নকল করে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দিলে তা বাতিল হবে এবং পুনরায় তাকে অ্যাসাইনমেন্ট জামা দিতে হবে।
লেখায় তথ্য ও সূত্র উল্লেখ করা
যে বিষয়ের উপর অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করা হবে সে সংক্রান্ত তথ্য এবং সূত্র যাতে সঠিক হয় সে বিষয়ে নজর রাখতে হবে। শিক্ষকরা বলছেন, এক্ষেত্রে পাঠ্যবই হচ্ছে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর বলছে নির্ভুল তথ্য এবং যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা একটি ভালো অ্যাসাইনমেন্টের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
অ্যাসাইনমেন্টে যদি তথ্য ভুল থাকে তাহলে সেটির মূল্যায়ন খারাপ হতে বাধ্য।
ধারাবাহিকতা
নম্বরের উপর ভিত্তি করে উত্তর দিতে হবে। কিছু প্রশ্নের উত্তর আছে ছোট। সেগুলো সুনির্দিষ্টভাবে ছোট ছোট করে উত্তর দিতে হবে। কিছু প্রশ্ন আছে বিশ্লেষণধর্মী। এ ধরনের অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করতে হলে একটি ভূমিকা থাকতে হবে, এর পটভূমি উল্লেখ করতে হবে, তারপর মূল বক্তব্য এবং বিশ্লেষণ।
সবার শেষে উপসংহার টানতে হবে। যেখানে শিক্ষার্থীর পর্যবেক্ষণ উঠে আসতে পারে।
গুছিয়ে লেখা
নবম শ্রেণীর একটি অ্যাসাইনমেন্ট হচ্ছে ‘একজন দেশপ্রেমিক নাগরিকের দশটি গুণ ১০ বাক্যে প্রকাশ করো’। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এ অ্যাসাইনমেন্ট তৈরি করতে হলে দেশপ্রেমের বিষয়টি উল্লেখ করতে হবে। অর্থাৎ দেশপ্রেম বলতে কী বুঝায়?
শিক্ষকরা বলছেন, বাক্যগুলো এমনভাবে লিখতে হবে যাতে একটি বাক্যে একটি ভাব প্রকাশিত হয়। বাক্য গঠন এবং বানান যাতে শুদ্ধ হয় সে বিষয়গুলো মনে রাখতে হবে।
সুন্দর হাতের লেখা
শিক্ষকরা বলছেন, অ্যাসাইনমেন্টে ভালো নম্বর পেতে হলে হাতের লেখা সুন্দর হবার কোন বিকল্প নেই। মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী হাতে লিখে অ্যাসাইনমেন্ট স্কুলে জমা দিতে হবে।
শিক্ষার্থীর হাতে লেখা যদি ভালো না হয় তাহলে সেটি শিক্ষকের মনে বিরক্তির উদ্রেক করতে পারে। সেজন্য হাতের লেখা ভালো হলে সেখানে শিক্ষকদের সুনজর থাকে।
যেহেতু অ্যাসাইনমেন্ট বাড়িতে বসে তৈরি করা হচ্ছে এবং পরীক্ষার হলের মতো এখানে সময়ের কোন বাধ্যবাধকতা নেই, সেজন্য শিক্ষার্থীরা চাইলে সহজে তাদের হাতের লেখা সুন্দর করে অ্যাসাইনমেন্ট উপস্থাপন করতে পারেন।
উপস্থাপনায় বৈচিত্র্য
যে অ্যাসাইনমেন্ট উপস্থাপন করা হচ্ছে সেখানে বৈচিত্র্য থাকা জরুরি। সাদামাটাভাবে উপস্থাপন করার চেয়ে উদাহরণ দিয়ে উপস্থাপন করতে পারলে উপস্থাপনায় বৈচিত্র্য আসে।
সূত্র : বিবিসি বাংলা