এসএম মশিউর রহমান সরকার,বালিয়াডাঙ্গী প্রতিনিধি : মাহফুজ উল্লাহ (১০ মার্চ ১৯৫০-২৭ এপ্রিল ২০১৯) ছিলেন একজন বাংলাদেশি লেখক, সাংবাদিক, টেলিভিশন ব্যক্তিত্ব ও পরিবেশবিদ। বাংলাদেশে তিনিই পরিবেশ সাংবাদিকতার সূচনা করেন.মাহফুজ ১৯৫০ সালের ১০ মার্চ নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জের গোপালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম হাবিবুল্লাহ এবং মাতার নাম ফয়জুননিসা বেগম। মাহফুজ ভারতীয় উপমহাদেশে সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের অন্যতম অগ্রদূত মুজাফ্ফর আহ্মেদের দৌহিত্র । তার বড় ভাই অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ ,তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় আছেন।
মাহফুজ উল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭২ সালে পদার্থবিদ্যায় স্নাতকোত্তর ও ১৯৭৪ সালে সাংবাদিকতায় পুনরায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ছাত্র রাজনীতির কারণে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনামলে তাকে ঢাকা কলেজ থেকে বহিষ্কার করা হয়।তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের কর্মী হিসেবে ঊনসত্তরের ১১ দফা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি সাংবাদিকতা ছাড়াও খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। ছাত্রাবস্থাতেই মাহফুজ উল্লাহ সাংবাদিকতা পেশায় কাজ শুরু করেন। ১৯৭২ সালে সাপ্তাহিক বিচিত্রার জন্মলগ্ন থেকেই এ পত্রিকার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। মাঝে চীন গণপ্রজাতন্ত্রে বিশেষজ্ঞ হিসেবে, কলকাতাস্থ বাংলাদেশ উপদূতাবাসে কাজ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ এবং সাংবাদিকতা বিভাগে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতা করেন।
বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের নেতৃস্থানীয় বাংলা ও ইংরেজি দৈনিকে কাজ করেছেন। রেডিও ও টেলিভিশনে অনুষ্ঠান উপস্থাপনাসহ একাধিক টক শো অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে সংবাদ ও রাজনীতি নিয়ে নানামুখী বিশ্লেষণ করতেন।
মৃত্যুর পূর্বে তিনি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগে শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।তিনি সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট নামে একটি পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত একজন সক্রিয় পরিবেশবিদ ছিলেন এবং বাংলাদেশে তিনিই পরিবেশ সাংবাদিকতার সূচনা করেন।
এছাড়ও তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের এবং আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব নেচার-এর আন্তর্জাতিক পরিচালনা পর্ষদের প্রথম বাংলাদেশী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন।