রবিবার, ২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাঘায় প্রতিবন্ধীর পৈতৃকসম্পত্তি দখল পেতে থানায় হয়রানিমূলক মামলা

এম ইসলাম দিলদার বাঘা প্রতিনিধি, রাজশাহীঃ রাজশাহীর বাঘা উপজেলাধীন ২নং গড়গড়ী ইউনিয়নের সরেরহাট এলাকার মৃত এমদাদুল হক ইনুর মেয়ে আরজুমান বানু (বানী) নিজ পৈতৃক সূত্রে পাওয়া জায়গা-জমির দখল পেতে ঘুরছেন দারে দারে। আরজুমান বানু একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী (৪০), স্বামী হাবিবুর রহমান তাদের ৪ বছরের একটি কন্যা রয়েছে। আরজুমান বানুর সমাজ সেবা অধিদপ্তরের সমাজ কল্যাণ মন্ত্রনালয় এর বাঘা উপজেলা সমাজ সেবা কর্তৃক প্রতিবন্ধী কার্ড নং ১২৯ বলে জানা যায়। সরেজমিনে, এমদাদুল হক ইনুর মৃত্যুর সময় নিজ নামিও ৪৮.৫৩ শতাংশ জায়গা-জমি রেখে যান।তার স্রী আজমিরা এবং ২ছেলে,২মেয়ে রয়েছে। পিতার রেখে যাওয়া সম্পত্তির প্রতিবন্ধী বানু ছাড়া অন্য সকলেরই ভোগ-দখল রয়েছে। প্রতিবন্ধী বানুর ভাই এনামুল হক এর স্রী অর্থাৎ বানুর ভাবী আফরোজা আফরিন(৩৫) বৈধ সম্পত্তির ভাগ না দেওয়ার জন্য মিথ্যা ভাবে মামলা দিয়ে হয়রানিমূলক আচরণ করেই চলেছে।২০১৭ সাল হতে বিভিন্ন সময় এই অসহায় প্রতিবন্ধীকে লাঞ্ছিতসহ বিভিন্ন সমস্যা করেই চলেছে।বানুর ভাই এনামুল হক একজন সেনাবাহিনীর সদস্য বলে জানান বানুর মা আজমিরা। শারীরিক প্রতিবন্ধী বানু ঠিকমত কথা বলতে পারে না।তার পক্ষে স্বামী হাবিবুর রহমান জানান,তার শশুরের সম্পত্তির মধ্যে বাঘা উপজেলার সরেরহাট মোজার,জে এল নং ১৫০ এর আর এস খতিয়ান নং ২৪১ও ২৮৪ দাগের হতে ওয়ারিশ সূত্রে ৬.৯৪ শতাংশ সম্পদের প্রাপ্ত হয় প্রতিবন্ধী আরজুমান বানু। লেঃকর্ণেল রমজান আলী সরকার (অবঃ)ও ডাঃ স্বপনসহ অনেকেই চাচ্ছিলেন এই প্রতিবন্ধীর সঠিক প্রাপ্য বুঝিয়ে দেওয়ার এবং সামাজিক পরিবেশ ও রক্তের সম্পর্ক বজায় রাখতে।শারীরিক প্রতিবন্ধী বানুর প্রতি হয়রানিমূলক মামলার অবসান ঘটাতে গত ১২জুন শুক্রবার গড়গড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে সঠিক সীমানা নির্ধারণ করেন। তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী আরজুমান বানুর জায়গা-জমি দেখিয়ে দেন অত্র এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ সঙ্গে নিয়ে। সালিশি কপিতে পাওয়া যায় প্রতিবন্ধী আরজুমান বানুর ভাইদ্বয়ের নির্মিত বসত-বাড়ি সংলগ্ন জমিসহ বাড়ী বহাল রাখিয়া বর্তমান এনামুল হকের বাড়ীর দক্ষিণে এবং রায়হান মুন্সীর ঔষধের দোকানের উত্তরে অবস্থিত ফাকা জমি যাহার পূর্ব হতে পশ্চিমে ৬৪ ফিট এবং উত্তর হতে দক্ষিণে সাড়ে ২৪ ফিট মোট ৩.৬৪ শতাংশ জমি যাহা বানু খাতুন(শারীরিক প্রতিবন্ধী) কে সরেজমিনে ভোগ-দখলের জন্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়।

২নং গড়গড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, আমি নির্বাচিত হওয়ার অনেক আগ থেকেই তাদের জমিজমা সংক্রান্ত জটিলতা দেখে আসছি। নির্বাচিত হওয়ার পর বেশ কয়েক বার নিজ উদ্দোগেই বিষয়টি নিষ্পত্তি করার জন্য তাদের কয়েকবার ডেকেছি। নির্ধারিত দিন ও সময়ে প্রতিবন্ধীরা সকলেই উপস্থিত হলেও আরোজা আফরিনরা কোন দিনও উপস্থিত হন নি। সর্বশেষ শুক্রবার (১২জুন) আদালতের নির্দেশ মোতাবেক জমির সমাধান করার জন্য গ্রাম্য শালিসী বৈঠক বসে। উক্ত শালিসী বৈঠকের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে প্রতিবন্ধী বানু কে তার ন্যায্য অংশ বুঝিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় পরের দিন জানতে পারি শালিস অমান্য করে বানুর ভায়ের স্ত্রী আফরোজা আফরিন শালিসে দেওয়া সীমানা তুলে ফেলেন। আবার আফরোজা আফরিন বাদী হয়ে প্রতিবন্ধী বানুর স্বামীসহ কয়েকজনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
থানা সুত্রে জানা যায় , অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান এ এস আই ওমর ফারুক। পরিদর্শনের সত্যতা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিবন্ধী বানুর স্বামী হাবিবুরসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে বানুর ভাবী আফরোজা আফরিন দিনের বেলায় নগদ ৮০ হাজার টাকা ও ৮ভরি স্বর্ণ ডাকাতির অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা,বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত।

এই বিভাগের আরো খবর