ডেস্ক নিউজ : বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আর্থিক ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা চেয়েছে যুক্তরাজ্য। পাশাপাশি ডাবল ট্যাক্সেশন ট্রিটির সুবিধা সহজ ও দ্রুত করাসহ মোট সাতটি সমস্যা চিহ্নিত করে এর সমাধান চাওয়া হয়েছে। অন্যগুলো হল- দেশের দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা ও বন্দরে কম সুযোগ, কর প্রক্রিয়াকরণে জটিলতা, বিদেশি কোম্পানির জন্য প্রণোদনা, আইনি প্রক্রিয়ায় জটিলতা এবং কোম্পানির প্রচারণার কার্যক্রমের অর্থায়নে কর আরোপ। সম্প্রতি এসব সমস্যা তুলে ধরে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছেন ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশনার রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম মঙ্গলবার যুগান্তরকে বলেন, এ ব্যাপারে যে কোনো সিদ্ধান্ত সরকার নেবে। বিডা শুধু প্রমোশনালমূলক কাজ করছে। কারণ বিদেশি বিনিয়োগের সঙ্গে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংস্থার সম্পৃক্ততা আছে। আমরা ওইসব মন্ত্রণালয় ও সংস্থার কাছে চিঠি দিয়েছি। তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯ পরিপ্রেক্ষিতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর ব্যাপারে ইতোমধ্যে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। আরও নেয়া হবে। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি কয়েকটি নির্দেশ দিয়েছেন। সে অনুযায়ী কার্যক্রম চলছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে ব্রিটিশ বিজনেস গ্রুপে (বিবিজি) যুক্ত হয়েছে অর্থ বিভাগ। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে ব্রিটিশ হাইকমিশনার চিঠিতে বলেছেন, আর্থিক খাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকা দরকার। এটি ফোকাস করতে পারলে ভালো হবে। আর বারবার রাজস্ব খাতের নীতি পরিবর্তন না করাই শ্রেয়। কারণ এতে যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বারবার নীতি পরিবর্তনে অনেক বিনিয়োগকারীর মুনাফা কমে যায় এবং বিনিয়োগে দুর্বলতা তৈরি হয়। এছাড়া ডাবল ট্যাক্সেশন (কর) বিনিয়োগকারীদের জন্য এক ধরনের হুমকি। বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হলে ডাবল ট্যাক্সেশন ট্রিটির সুবিধা আরও সহজ ও দ্রুত করতে হবে। কারণ এটি বিদেশি বিনিয়োগকারী নিয়ে আসার অন্যতম চাবিকাঠি।
চিঠিতে আরও বলা হয়, বিদেশি কোম্পানির কার্যক্রম প্রচারণার জন্য প্রমোশনালমূলক নানা ধরনের কর্মকাণ্ডে অর্থ ব্যয় করতে হয়। বর্তমানে একটি বিদেশি কোম্পানির মোট বার্ষিক টার্নওভারের দশমিক ৫ শতাংশ পর্যন্ত ব্যয়ের ওপর করমুক্ত রাখা হয়েছে। এই করমুক্ত সীমা আরও বাড়ানোর বিষয়টি পর্যালোচনা করার সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া বিদেশি কোম্পানিগুলোকে নানা ধরনের কর দিতে হয়। এক্ষেত্রে জটিলতা আছে। এসব জটিলতা নিরসনের কথাও বলেন রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন। তিনি চিঠিতে আরও বলেন, বিদেশি কোম্পানিগুলোকে সরকারের ঘোষিত প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় আনতে হবে। সরকার দেশি কোম্পানির জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এক্ষেত্রে দেশি ও বিদেশি কোম্পানির লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চয়তা জরুরি।
এতে বলা হয়, দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থা দুর্বল। পাশাপাশি আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় অনেক ক্ষেত্রে কার্যক্রমে বিলম্ব হচ্ছে। আর এতে বন্দর দিয়ে পণ্য রফতানি কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। যে কারণে বিশ্বমানের প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ। এ জন্য যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বন্দরের সুবিধা বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আইনি প্রক্রিয়া দ্রুত কারার ব্যবস্থা নিতেও বলা হয় চিঠিতে।