সকাল-বিকেল রুটি? যখন তখন মুঠো মুঠো বিস্কুট? ব্রেকফাস্ট মানেই ব্রেড? বাচ্চার টিফিনে কেক? মারাত্মক বিপদ ডেকে আন। ব্লাড সুগার থেকে হার্ট। গমের খাবারে মারাত্মক ক্ষতি।
স্বাস্থ্য রক্ষায় গমের কোনও বিকল্প নেই। এটাই প্রচলিত ধারণা। সুগার এড়াতে হোক কী চর্বি ঝরাতে, ভাতের বিকল্প হিসেবে অনেকেই আটা বা ময়দার খাবার বেছে নেন। কিন্তু বিদেশের বিখ্যাত কার্ডিওলজিস্ট উইলিয়াম ডেভিস বলছেন পুরো উল্টো কথা।
১৫ বছরের গবেষণায় উইলিয়াম ডেভিস নিশ্চিত, রোজকার খাদ্য তালিকা থেকে গম বাদ দিলে বদলে যাবে জীবন। নিউ ইয়র্ক টাইমসের অন্যতম বেস্ট সেলার WHEAT BELLY বইয়ে ডেভিসের দাবি, নিয়মিত গমজাত খাবার খেলে হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, ওবেসিটির সম্ভাবনা বাড়ে। ডেভিস তাঁর গবেষণায় জানাচ্ছেন, গমের খাবার হু হু করে বাড়িয়ে দেয় ব্লাড সুগার। একটা স্নিকার্স বার খেলে যতটা ব্লাড সুগার বাড়ে, ২টো আটার রুটিতে তার চেয়ে অনেক বেশি বাড়ে।
গমে থাকা অ্যামিলোপেকটিন A-কে ভিলেন ঠাওরেছেন ডেভিস। তাঁর দাবি, অ্যামিলোপেকটিন A রক্তে থাকা স্মল LDL পার্টিকল বাড়িয়ে দেয়। ফলে হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ে।
খাদ্য তালিকা থেকে অ্যামিলোপেকটিন বাদ দিলে রক্তে LDL পার্টিকল ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়। গমে বেশি পরিমাণে থাকে প্রোটিন গ্লিয়াডিন। গ্লিয়াডিন খিদে বাড়ায়। ডেভিসের যুক্তি, গম জাত খাবার খেলে খিদে পায় বেশি। যাঁরা গমের খাবারের ওপরেই থাকেন, তাঁরা অন্যদের চেয়ে দিনে ৪০০ ক্যালোরি বেশি ইনটেক করেন।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, হাইব্রিড চাষের কারণে সত্তর ও আশির দশকের সময় থেকে বদলাতে শুরু করেছে গমের চরিত্র। বাড়ছে অ্যামিলোপেকটিন, গ্লিয়াডিন, গ্লুটেনের মতো পদার্থ।
তার ফলে গম এখন মারাত্মক। বিজ্ঞানীদের পরামর্শ, রোজকার খাদ্য তালিকা থেকে ব্রেড, পাস্তা, চাপাটি বাদ দেওয়া হোক। ওজন কমাতে গম এড়িয়ে মুরগির মাংস আর ভাত খেতে বলছেন তাঁরা! যুক্তি দুটো, ব্লাড সুগার বাড়বে না। অতিরিক্ত খিদের কারণে ক্যালোরি ইনটেক বাড়বে না।
খাদ্য তালিকা থেকে গম বাদ দিয়ে কী উপকার পেয়েছেন ডেভিসের পেশেন্টরা? উঠে এসেছে এমন তথ্য —
১. কয়েক মাসে ওজন হ্রাস
২. ব্লাড সুগার কমে যাওয়া
৩. অ্যাজমা থেকে মুক্তি
৪. মাইগ্রেন, অ্যাসিডিটি কম
৫. কোলাইটিস ও রিউম্যাটয়েড আর্থারাইটিস দূর।