রতিটি নিঃশ্বাসের মূল্য তাঁরাই ভালো বোঝেন যাঁরা শ্বাসকষ্টের রোগী! বিশেষ করে যাঁরা অ্যানজাইনা বা শ্বাসকষ্টমূলক হৃদশূলে আক্রান্ত, তাঁরা হাড়ে হাড়ে টের পান এর যন্ত্রণা।
ধমনীর কার্যক্রম কোনো কারণে বাধাগ্রস্ত হলে হৃত্পিণ্ড অক্সিজেনের অভাবে ধুঁকতে থাকে। এক পর্যায়ে হতে থাকে হৃদশূল বা বুকে ব্যথা।
অ্যানজাইনা বা শ্বাসকষ্টমূলক হৃদশূলের প্রকোপ থেকে মুক্ত থাকার জন্য রইল ৬টি উপায় :
ধূমপান ত্যাগ করুন : ধূমপান রক্তে কার্বন মনোক্সাইডের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়, অক্সিজেন বিচ্যুত হয় তার স্ব-অবস্থান থেকে। ফলে ধমনীর কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয় এবং হৃত্পিণ্ডে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছায় না।
সিগারেটের ধোঁয়া ধমনীর রক্তের অতি ক্ষুদ্র পর্দাবিশেষকে জোড়া দিয়ে একত্রিত করে। ফলে চূড়ান্তভাবে দেহে বাসা বাঁধে অ্যানজাইনা বা শ্বাসকষ্টমূলক হৃদশূল। তাই ধূমপান ত্যাগ করে নির্মল বায়ু সেবনের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
পরিমিত খাদ্যগ্রহণ করুন : খাওয়ার সময় অল্পই সর্বোত্তম – কথাটি গুরুত্বের সাথে মনে রাখতে হবে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত লবণ, চর্বিজাতীয় খাবার খেলে শরীরের রক্তচাপ দ্রুত বাড়তে থাকে। ফলে অ্যানজাইনায় আক্রান্ত হবার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। সতর্ক থাকতে হবে মোট ক্যালরি গ্রহণের বেলায়ও।
ব্যায়াম করুন : শ্বাসকষ্ট বা পীড়ন হ্রাসে ব্যায়াম খুবই কার্যকর। তাছাড়া ব্যায়াম দেহের ওজন কমাতেও সাহায্য করে। রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখায় ব্যায়াম অতুলনীয়। ফলে ওষুধ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা কমে যায়।
তবে একজন অ্যানজাইনা রোগীকে জানতে হবে, বুঝতে হবে যে কোন ধরনের ব্যায়াম কখন এবং কতক্ষণ করা যাবে। এ ব্যাপারে চিকিত্সকের পরামর্শ গ্রহণ করাটা আবশ্যক।
বিশ্রামের কৌশল জানুন : শিথিলায়ন বা বিশ্রাম শরীরে প্রাণশক্তি জোগায়। কিন্তু চাইলেই প্রচুর বিশ্রাম গ্রহণের সুযোগ সবসময় পাওয়া যায় না। জীবনসংগ্রামের জন্য কাজের মাঝে ডুবে থাকতে হয়।
তবুও বিশ্রামের সময় পাওয়া সম্ভব যদি সুচিন্তিত পরিকল্পনার আওতায় দিনের চব্বিশ ঘণ্টাকে সাজিয়ে নেয়া যায়। অ্যানজাইনা রোগীর জন্য বিষয়টি খুবই জরুরি।
খাদ্যে তেল নিয়ন্ত্রণ করুন : যতদূর সম্ভব তেলজাতীয় খাবার এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। চর্বিবিহীন মাংস খান। মাংসের কোলেস্টেরলে পূর্ণ বিভিন্ন অংশ যেমন কলিজা, যকৃত, গুর্দা ইত্যাদি খাবার হিসেবে গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন।
দিনের খাবারে তেলের পরিমাণ ৫-৭ চা চামচের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করুন। হাঁস-মুরগির চামড়া খাবেন না। রান্নার পূর্বেই তা সরিয়ে ফেলুন। প্রতিদিনের খাবারে শাকসবজি ও ফলমূলের পরিমাণ বাড়ান।
অ্যানজাইনা যখন রাতে : অনেকেরই অ্যানজাইনা সংক্রান্ত সমস্যা রাতে হয়। সেক্ষেত্রে ভালো হয় যদি ঘুমের সময় মাথা বিছানা থেকে ৩-৪ ইঞ্চি উপরে রাখা যায়। এতে করে রক্তের স্রোতধারা থাকবে পা-মুখী। ফলে অ্যানজাইনা যেসব কারণে হয় তার সম্ভাবনা কম থাকবে।