নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার প্রান কেন্দ্র ভবানীগঞ্জ পৌরসভার প্রবেশ পথ গুলো থেকে জোর করে রশিদ দিয়ে ভ্যান,অটোরিকশা,পিকাপ,ভুটভুটি ও ট্রাক চালকদের কাছে থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।এসব অসহায় গাড়ি চালকরা অভিযোগ করে জানান, পৌর মেয়র আব্দুল মালেকের আপন বড় ভাই ছাত্তারের নির্দেশে পৌরসভার প্রবেশপথ ব্রাক মোড়,গোডাউন মোড় ও কলেজ মোড় দিয়ে যে সকল ভ্যান,অটোরিকশা, পিকাপ,ভুটভুটি ও ট্রাক পৌরসভার ভিতরে প্রবেশ করলেই চালকদের কাছে থেকে প্রতিদিন যানবাহন ভেদে সর্বনিম্ন বিশ টাকা থেকে শুরু করে সর্বচ্চো সত্তর টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হয়। চালকদের অভিযোগ, এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে বারবার অভিযোগ করা হলেও কোনও ব্যবস্থা নেয়না প্রশাসন।
নাটোরের শফিকুল ইসলাম নামে এক পিকাপ চালক অভিযোগ করে জানান, তিনি পিকাপ চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। গত কয়েক মাস আগে আমি খালি গাড়ি নিয়ে ভবানীগঞ্জ বাজারে যাচ্ছিলাম সরিষা আনার জন্য।ব্রাক মোড়ে পৌছালে হঠাৎ এক ছেলে হাত তুলে গাড়ি থামাতে বলে।আমি গাড়ি থামালে সেই ছেলে সত্তর টাকার একটি রশিদ হাতে ধরিয়ে দেয়।আমি টাকা দিতে রাজি না হওয়াতে সে জোর করে আমাকে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করে।পরে আমি টাকা দিয়ে বাজারে প্রবেশ করি।বাজারে প্রবেশ করে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি,ছেলেটির নাম আশিক আর সে পৌর মেয়র মালেক সাহেবের আপন বড় ভাই আব্দুল ছাত্তারের নির্দেশে রশিদ দিয়ে চাঁদা আদায় করে।ক্ষমতাসীন দলের মেয়রের ভাই,তাই ভয়ে কাউকে কিছু না বলে চলে আসি।তারপর থেকে যতদিন ভবানীগঞ্জ গিয়েছি প্রতিবার সত্তর টাকা দিয়ে রশিদ নিয়ে পৌরসভাতে প্রবেশ করেছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক অটোরিকশা চালক জানান, তিনি কয়েক বছর যাবৎ অটোরিকশা চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন ।প্রতিদিন বিশ টাকা দিয়ে রশিদ নিতে হয়।আর রশিদ না নিলে কপালে জোটে আশিকের নির্যাতন।তাই কোন প্রতিবাদ করি না।আর যার কাছে অভিযোগ করব, চাঁদাতো তারই ছোট ভাই নিচ্ছেন।
চালকরা দুঃখ প্রকাশ করে জানান, সারাদিন মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অনেক কষ্ট করে টাকা উপার্জন করি অথচ প্রতিদিন তাদের কাছ থেকে রশিদ দিয়ে টাকা আদায় করা হচ্ছে। মালেক মেয়রের বড় ভাই ছাত্তারের ক্যাডার আশিক ও উজ্জল রশিদ দিয়ে এই চঁাদা আদায় করে ব্রাক মোড়ে।আলী ও মামুন নামক অন্য দুই জন চাঁদা আদায় করে গোডাউন মোড়ে এবং ওছির ও খাঁজা চাঁদা আদায় করে কলেজ মোড়ে। কেউ প্রতিবাদ করলে সড়কের উপর যানবাহন থামিয়ে মারধোর ও আটকে রাখাসহ নানা ভাবে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।
টাকা আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুল ছাত্তার বলেন,মেয়র মালেক আমার ভাই,রশিদ দিয়ে টাকা নেওয়ার বিষয় টি সত্য আর বিষয় টি সবাই জানে।
টোল আদায়ের বিষয়ে অভিযুক্ত আলী বলেন,আপনি আমার সাথে দেখা করেন,আপনার সাথে সরাসরি কথা বলবো।
আরেক মোড়ের টোল আদায়কারী ওছির জানান,আমি এখন অসুস্থ, এ বিষয়ে আপনার সাথে পরে কথা বলবো।
টোল আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা থানার অফিসার
ইনচার্জ আতাউর রহমান বলেন, এটি নিয়ে এর আগেও একবার বসা হয়েছিল আর এ বিষয়ে এখন আমি কোন মন্তব্য করতে পারবো না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক বলেন,অভিযোগ পাবার পর এর আগেও একবার আমি টোল আদায় বন্ধ করে দিয়েছিলাম, তারা যদি আবারো টোল আদায় শুরু করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।