ডেস্ক নিউজ : তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতিতে ঈর্ষান্বিত হয়ে এবং একই সঙ্গে নিজেদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকিত হয়ে পড়ায় সেই ঈর্ষা ও শঙ্কা থেকে রিজভী আহমেদসহ বিএনপি নেতারা যে বক্তব্যগুলো রাখছেন তা উদভ্রান্তের প্রলাপের মতো। বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীতে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট নির্বাহী পরিষদের সভার শুরুতে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এ সময় ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে বিএনপি ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ বলে আখ্যা দিয়েছে- এ বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্য সচিব কামরুন নাহার, প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর ওয়াজেদ, নির্বাহী কমিটি সদস্যদের মধ্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, ঢাকা সংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন। তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি গত ১১ বছরে কোনো বাজেটের প্রশংসা করতে পারেনি। প্রতিবারেই তারা বাজেটকে উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলেছেন। দেশের আরও কিছু প্রতিষ্ঠানও বিএনপির সঙ্গে একই সুরে কথা বলে। কিন্তু তাদের সমস্ত শঙ্কা, বিশেষজ্ঞতা ও বিরূপ মতামত ভুল প্রমাণ করে বাংলাদেশে গত ১১ বছর সব বাজেট বাস্তবায়িত হয়েছে। বাজেট বাস্তবায়নের হার উন্নয়ন বাজেটসহ ৯৩ থেকে ৯৭ শতাংশ।
এ বাজেটগুলো বাস্তবায়িত হওয়ার কারণে দেশে মানুষের মাথাপিছু আয় সাড়ে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে, জিডিপির আকার বেড়েছে প্রায় তিনগুণ, বাংলাদেশ স্বল্পন্নোত থেকে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে, দারিদ্র্য ৪১ থেকে ২০ শতাংশে নেমে এসেছে- এটিই হচ্ছে বাস্তবতা বলে উল্লেখ করেন ড. হাছান মাহমুদ। বাজেট পাসের আগেই মোবাইল অপারেটররা অতিরিক্ত টাকা কেটে রাখছে- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমত বাজেট পাস হওয়ার আগেই মোবাইলে যদি অতিরিক্ত টাকা কাটা শুরু হয়ে থাকে, এটি অন্যায়। মোবাইল কোম্পানিগুলো প্রস্তাবিত বাজেটের কথা ধরে ৩০ জুন বাজেট পাস হওয়ার আগে এটি করা সমীচীন নয়, অন্যায় এবং আইনবহির্ভূত।
তথ্যমন্ত্রী এ সময় সাংবাদিকদের করোনাভাইরাসের সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ইতিমধ্যে দেশে প্রায় তিনশত সাংবাদিক করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। বেশ ক’জন সাংবাদিক বন্ধু করোনাভাইরাসে ও আরও ক’জন এ রোগের উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। এ সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যেও তারা কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু এই পরিস্থিতিতেও দুঃখজনকভাবে অনেক মিডিয়া হাউজ সঠিক সময়ে বেতন ভাতা দেননি। অনেক হাউজে অনেক সাংবাদিক চাকরিচ্যুতির শিকার হয়েছেন। ড. হাছান বলেন, এ বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, এই প্রেক্ষাপটে দুস্থ, অসহায় হয়ে পড়া সাংবাদিকদেরকে যাতে আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়।
তিনি বলেন, সেই লক্ষ্যে আমরা পূর্বের সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সভায় যারা চাকরিচ্যুৎ, দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছেন না এ ধরনের যারা অসহায় অবস্থায় নিপতিত সাংবাদিকদের এককালীন ১০ হাজার টাকা করে অনুদান দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলাম। তথ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে সেই অনুদানের প্রথম পর্যায়ে যারা সহায়তা পাবেন তাদের তালিকাটি চূড়ান্ত করব। এই তালিকাটি সাংবাদিক নেতারাই চূড়ান্ত করেছেন এবং ট্রাস্টের নীতিমালা অনুযায়ী সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং ডেপুটি কমিশনারদের মাধ্যমে যেগুলো এসেছে অর্থাৎ সাংবাদিক নেতারা বা অন্য কোনো সংগঠনের মাধ্যমে পাওয়া তালিকাও যে তারা বিবেচনায় নেননি তা নয়। সেই তালিকা আজকের সভায় উপস্থাপনের পর সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চূড়ান্ত করা হবে জানিয়ে ড. হাছান বলেন, প্রথম পর্যায়ে দল-মত নির্বিশেষে দেড় হাজার সাংবাদিকের তালিকা আমরা চূড়ান্ত করব। পরবর্তী পর্যায়ে আরও সাংবাদিক এ সহায়তা পাবেন। সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে তারা চেক গ্রহণ করবেন।