শুক্রবার, ২৭শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১২ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে আম উৎপাদনে শীর্ষে নওগাঁ

রহিদুল ইসলাম রাইপ, নওগাঁ প্রতিনিধিঃ দেশে এখন আম উৎপাদনে শীর্ষে নওগাঁ জেলা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলাকে ছাড়িয়ে আম উৎপাদনে শীর্ষে। চলতি মৌসুমে নওগাঁয় ৪ লাখ ২০ হাজার মেট্রিকটন আম উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা থেকে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার আম কেনা-বেচা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সারাদেশে আম উৎপাদনে শীর্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিচিত হলেও বর্তমানে সারাদেশে আম উৎপাদনে শীর্ষে নওগাঁ রয়েছে। ফলে আমের ‘রাজত্ব’ শুরু করেছে এবং ‘আমের রাজধানী’ হিসেবে নওগাঁ পরিচিত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

চলতি বছরে নওগাঁয় ১১টি উপজেলায় ২৪ হাজার ৭শ’ ৭৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। নওগাঁয় গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে ছয় হাজার হেক্টরেরও বেশি জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। আগামীতেও বরেন্দ্র ভূমি হিসেবে পরিচিত পোরশা, সাপাহার, নিয়ামতপুর ও পত্নীতলায় হাজার হাজার বিঘা জমিতে আম চাষে ব্যাপক সম্ভবনা দেখা দিয়েছে।

চলতি মৌসুমে নওগাঁর আম চাষিরা কনোরা ভাইরাসের কারণে বিপাকে পরেন। আম চাষিদের নায্য মূল্য কেনা-বেচা নিশ্চিত করতে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি আম পাকার আগে থেকেই জেলা, পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন, আম চাষি, ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে একাধিকবার ভিডিও কনফারেন্স করেছেন।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, যে সব জায়গা থেকে আম ও লিচু রাজধানীতে যাবে সে সব রাস্তায় কোন ট্রাক যেন প্রতিবন্ধকতার মুখে না পড়ে, সে জন্য দৃষ্টি রাখবে সরকার।
অ্যাপসের মাধ্যমে শুধুমাত্র আমের বাজারের সাথে নয়, পরিবহনের সাথেও যোগাযোগ থাকবে। সরকারী পরিবহনের সাথে, এমনকি বন্দরে ট্রাক কাভার্ড ভ্যানের সাথেও যুক্ত থাকবে।
এছাড়াও ৮টি সংস্থার সাথে সংযুক্ত থাকবে, তাদের বললেই সেখানে গিয়ে নিয়ে আসবে এসব পণ্য।
আম নিয়ে ঢাকায় পৌঁছে দেয়ার পর খালি ট্রাক ফিরে গেলে যমুনা সেতুতে টোল ৫০ ভাগ নেয়া হবে।
পাশাপাশি হাসপাতালে রোগীদের খাদ্যে কলার পরিবর্তে আম দেয়া, পুলিশ ব্যারাকে আমের বাজার গড়ে তোলা, সেনাবাহিনীতে আমের বাজার গড়ে তোলা ইত্যাদি ব্যবস্থা করা হচ্ছে, যাতে আম চাষীরা আমের নায্য মূল্য পায়।
সে জন্য নওগাঁর জেলা প্রশাসকসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন তিনি।
এ ছাড়াও ইত্যে মধ্যে নওগাঁর পোরশা উপজেলার সরাইগাছীতে খাদ্যমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আম কেনার হাট-বাজারের উদ্বোধন করেছেন। ফলে পোরশা উপজেলার আম চাষিদের আম কেনা-বেচার কষ্ট অনেকটাই লাঘব হয়েছে। পোরশা উপজেলার আম চাষিরা আগে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে সাপাহার উপজেলায় যেতেন যার ফলে তাদের পরিবহণ খরচ বৃদ্ধি পেতো অনেকাংশে।

নওগাঁ কৃষি বিভাগের সূত্রে জানাযায়, জেলায় আমপানসহ কয়েকটি ছোটবড় ঝড়ে কাঁচা আমের ৫ ভাগ ক্ষতি হলেও সেটি আম পোক্ত হওয়ার সাথে সাথে ক্ষতি পুষিয়ে গেছে। তবে কৃষকরা বলছেন, ঝড়ে তাদের আমের প্রায় ২০ ভাগ ক্ষতি হয়েছে। জেলায় গত ৩/৪ বছর থেকে ইত্যে মধ্যে ‘যাদুভোগ’ ৭/৮শ’ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে।

আমচাষী নজরুল ইসলাম বলেন, নওগাঁয় ৫ বছর আগে কিছু দিন চাকুরী করেছি। তখন সেখানে দেখেছি বছরের বেশি ভাগ সময় পানির অভাবে পরে থাকেন ওগাঁয় বরেন্দ্র ভূমির হাজার হাজার বিঘা জমি অর্থাৎ তেমন কোন আবাদ হয় না। যার কারণে নওগাঁয় আগামীতে সেসব জমিতে আম বাগান গড়ে উঠার সম্ভবনা রয়েছে।

এই বিভাগের আরো খবর