বুধবার, ২০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য দরকার শারীরিক সংস্পর্শ

লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের উহান থেকে অজানা নতুন করোনা ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে। কোনো প্রতিষেধক এবং ওষুধ না থাকায় এর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব দেওয়া হয় সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার ওপর।

সমস্যা হলো, মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যে শারীরিক সংস্পর্শের প্রয়োজন রয়েছে। কেননা স্পর্শ শরীরে বিভিন্ন হরমনের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণ করে, যা প্রয়োজনীয় অনুভূতির জন্ম দেয় ও মানসিক চাপমুক্তি ঘটায়। বাংলাদেশে করোনার সবশেষ পরিস্থিতি নিয়ে শনিবার অনলাইন ব্রিফিংয়ে এই বিষয়গুলো তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, ইতিবাচক স্পর্শে মানুষের শরীরে ডোপামিন, সেরোটোনিন, অক্সিটোসিন নামের হরমন নিঃসরণ বাড়ায় এবং করটিজল নিঃসরণ কমায়, যার ফলে ইতিবাচক অনুভূতি সৃষ্টি হয়।

যেমন অনুপ্রেরণা, সন্তুষ্টি, নিরাপত্তা, মানসিক চাপমুক্তি ইত্যাদি। দীর্ঘদিন সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা মানসিক দূরত্ব তৈরি করতে পারে। শিশুর সম্মিলিত বিকাশ বাধাগ্রস্থ হতে পারে৷ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে পারে এবং অতিরিক্ত মানসিক চাপ তৈরি করতে পারে৷

এর ফলে শিশু এবং বয়স্করা সবচেয়ে বিপদাপন্ন এবং নিরাপত্তাহীনতায় থাকে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বয়স্করা এই পরিস্থিতিতে শিশুর মতো অবুঝ আচরণ করতে পারেন। শিশুরা খিটখিটে বা অস্থির হয়ে উঠতে পারে। তাদের প্রতি সংবেদনশীল হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

এই সময়ের নারীদের স্বাস্থ্যের দিকেও বিশেষ নজর রাখার ওপর জোর দেন ডা. নাসিমা। বলেন, নারীর মাসিক পূর্ব বিষণ্ণতা, প্রসব উত্তর বিষণ্ণতা পঞ্চাশোর্ধ নারীদের মাসিক পরবর্তী উপসর্গ বা বিষণ্ণতা, হরমোনে ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি বিষয়গুলো বিশেষ মনযোগের দাবি রাখে। তাদের প্রয়োজনগুলোকে অগ্রাধিকার দিন। সংবেদনশীল আচরণ করুন এবং সহযোগিতা করুন৷ নারীর প্রতি সব সহিংসতা পরিহার করুন, বলেন এই বিশেষজ্ঞ।

মানসিক চাপ দূর করতে বাগান করা এবং পোষা পশু-পাখির আদর-যত্ন করার পরামর্শ দেন তিনি। নিয়মিত ঘুম, খাবার গ্রহণ, শরীর চর্চা, ভার্চুয়ালি সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখা, সুস্থ বিনোদন যেমন নাচ, গান, সিনেমা দেখা, ছবি আঁকা, বাগান করা এমনকি রান্নাও মানসিক চাপ কমিয়ে রাখতে সাহায্য করে।

মৃত্যুবরণকারীদের আশি শতাংশ পুরুষ
শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে ৩২৮৮ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত করা হয়েছেন। মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে এক লাখ ৫৯ হাজার ৬৭৯ জন। ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছেন ২৯ জন। শনাক্তদের মধ্যে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন এক হাজার ৯৯৭ জন৷ এর মধ্যে ৭৯.৪৭ শতাংশ বা এক হাজার ৫৮৭ জনই পরুষ। অন্যদিকে নারী ২০.৫৩ শতাংশ বা ৪১০ জন।

বয়স বিভাজনে সবচেয়ে বেশি ৪৩.৫২ শতাংশ ছিলেন ৬১ বছরের ওপরে। ৫১ থেকে ৬০ বছরের ছিলেন ২৯.০৪ শতাংশ। এছাড়া ১৪.৭১ শতাংশ ৪১-৫০ বছর, ৭.৪১ শতাংশ ৩১-৪০ বছর, ৩.৫১ শতাংশ ২১ থেকে ৩০ বছর, ১.২ শতাংশ ১১-২০ বছর আর ০.৬ শতাংশ ছিলেন দশ বছরের কম বয়সী। বিভাগ ভিত্তিতে মৃত্যুবরণকারী ১০৪১ জনই ছিলেন ঢাকার। চট্টগ্রামে ৫২১, রাজশাহীতে ১০১, খুলনায় ৮২, বরিশালে ৬৭, সিলেটে ৮৩, রংপুরে ৫৩ ও ময়মনসিংহ বিভাগে মারা গেছেন ৪৮ জন।

সূত্র: ডয়চে ভ্যালে

 

এই বিভাগের আরো খবর