রাব্বি আহমেদ, মেহেরপুর প্রতিনিধিঃ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলবাড়িয়া কড়ুইতলা খোকনের বাড়ি হতে হবির বাড়ি পর্যন্ত হেরিং বোন বোন্ড (এইচবিবি) করণ প্রকল্পে রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।
নিন্মমানের করার কারণে এলাকাবাসীর অভিযোগের পর সড়কের ওপরের অংশের কাজে কিছু সংখ্যক ১ নম্বর ইট ব্যবহার করা হলেও নিচের ভাগে ব্যবহার করা হয়েছে ২ ও ৩ নম্বর ইট। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে, এসকল প্রকল্পের সড়ক নির্মাণ কাজে ১ নম্বর ইট ব্যবহার করতে হবে।
এছাড়াও রাস্তা নির্মাণে নিচে ও উপরি ভাগে ১-২ ইঞ্চি ফাঁকা রেখে ইট বিছিয়ে বালি দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। রাস্তা খুঁড়ে কাজ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি শুধুমাত্র উঁচু নিচু সমান করে ইট বিছানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মহল্লার অনেকেই।সরকারের ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের গ্রামীন অবকাঠামো সংস্কার কর্মসূচি কাবিখা প্রকল্পে গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া কড়ুইতলা খোকনের বাড়ি থেকে হবির বাড়ি রাস্তা এইচবিবি করণ ও পূণঃ নির্মাণ প্রকল্পে ১০ মে:টন চাল বরাদ্দ পান তেঁতুলবাড়িয়া ইউপি সদস্য ও প্রকল্প সভাপতি ফেরদৌসী বেগম।
সরেজমিনে গেলে তেঁতুলবাড়িয়া কড়ুইতলা এলাকার একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করে বলেন, সড়কে ইট সোলিং কাজে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। প্রথমে খুবই নিম্নমানের ইট নিয়ে আসা হলেও মহল্লাবাসীর চাপের মুখে তা ফেরত দেওয়া হয়েছে। এভাবে সড়ক নির্মাণ করা হলে ছয় মাসের বেশি টিকবে না। পুরনায় আমাদের চলাচলের জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হবে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই এলাকার একজন বাসিন্দা বলেন, সাইনবোর্ডে লেখা আছে খোকনের বাড়ি হতে হবির বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণ এখন অল্প একটু রাস্তা করে বলে আর নাই। রাস্তা তৈরির বাকি যে ইটগুলো ছিল সেই ইট মহিলা মেম্বার উঠিয়ে নিয়ে গেল।
এখন মানুষের মুখে মুখে শুনেছি বাকি রাস্তা নাকি ফকির বাড়ি থেকে করা হবে। এদিকে আর রাস্তা হচ্ছে না, কি করবো কাঁদা মাটিতেই আবার গড়াগড়ি। আমাদের এই রাস্তায় যেখানে অসুবিধা সেখানেই কাজ বন্ধ করে দিলো। এখানে সবসময় কাঁদা থাকে কি আর করবো দিশেমিশে না পেয়ে মহল্লাবাসী আমরা নিজেরাই গরিবানা হালে চাঁদা পত্র তুলে রাস্তাটি নির্মাণের ব্যবস্থা করছি। যে টাকা উঠেছিল তা দিয়ে শুধুমাত্র বালি কেনা হয়েছে, এরপরে আবারো কিছু চাঁদা তুলে কিছু ইট অথবা রাবিশ দিয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করবো।
আমরা মেম্বারকে বলেছিলাম, রাস্তা নির্মাণের যে বাকি ইটগুলো আছে সেগুলো আমাদের দেন প্রয়োজনে আমরা নিজেরাই রাস্তা করে নেব, কিন্তু তিনি আমাদের কোন কথায় কান না দিয়ে ইট নিয়ে চলে গেছে। এই রাস্তার ভিতরে এখানে গর্ত হওয়ার কারণে সবসময়ই কাঁদা থাকে আমরা হাঁটতে পারিনা। তাই দু’পায়ে চলার পথ ঠিক করতে আমরাই লেবার, আমরাই ক্রেতা ও বিক্রেতা হয়ে রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা করছি। এমন একজন মেম্বার আমরা পেয়েছি, আজ পর্যন্ত কোন ভালো কি মন্দ কোন সুযোগই এই এলাকার মানুষ পাইনি। সরকারের এত সাহায্য সহযোগিতা আসে কিন্তু আমরা পাইনা।
হবির বাড়ি পর্যন্ত যতটুকু রাস্তা নির্মাণের কথা, সেটি যেন সম্পূর্ণ নির্মাণ করা হয় তার জোর দাবি জানান এলাকাবাসী। এবিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য ফেরদৌসী বেগমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ, কথা বলতে পারছিনা বর্তমানে আমি কুষ্টিয়ায় আছি। এ বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিরঞ্জন চক্রবর্তী জানান, খোকনের বাড়ি হতে হবির বাড়ি অভিমুখী যাবে এখন আমাদের এস্টিমেটে যতটুকু আছে ততটুকু সে করবে। এখন হবির বাড়ি পর্যন্ত যেতে হবে সেটাতো কোন কথা না। প্রকল্পে যতটুকু আছে আমরা ততটুকু করেছি।
ওই পর্যন্ত যেতে হবে এরকম কোন নিয়ম নেই। ওখানে যদি ৫০০ ফিট থাকে সেটি তো আমরা করতে পারবো না আমাদের এস্টিমেটে যতটুকু আছে ততটুকু আমরা করেছি। রাস্তা নির্মাণে ৩ নম্বর ইট ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, ৩ নম্বর ও ২ নম্বর কোন ইট চলেনা আমাদের রাস্তায়। তবে এধরনের ইট ব্যবহার করা হলে অবশ্যই দেখবো।