ডেস্ক নিউজ : করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের সহায়তায় প্রাথমিকভাবে ৭০০ কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে। সরকার থেকে কোনো সুদ ছাড়াই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে এ অর্থ দেয়া হবে। প্রয়োজনে এ তহবিলের পরিমাণ বাড়ানো হবে। ওই তহবিল হতে বিদেশ ফেরত প্রবাসীদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেবে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক। এ বিষয়ে আগামী রোববার প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সঙ্গে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের একটি চুক্তি স্বাক্ষর হবে। ওই দিন থেকেই এ ঋণ কর্মসূচি চালু হবে। এর বাইরে সরকারি খাতে অন্যান্য বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংক ও ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থায়নকারী সরকারি সংস্থা- পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) থেকেও আলাদা ঋণ কর্মসূচি হাতে নেয়া হচ্ছে। এছাড়া প্রবাসীদের জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের চলমান ঋণ কর্মসূচিগুলোও আরও সম্প্রসারণ করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, করোনা মহামারীর কারণে চাকরিচ্যুত হয়ে বা অন্য কোনো কারণে বিদেশ থেকে চলে আসা প্রবাসীদের সহজ শর্তে ও কম সুদে ঋণ দেয়ার জন্য সরকার প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে ৫০০ কোটি টাকা দিয়েছে। এছাড়া ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকেও আরও ২০০ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে। এই ৭০০ কোটি টাকাই সুদবিহীনভাবে দেয়া হয়েছে। এ তহবিল থেকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের বিকল্প কর্মসংস্থান হিসেবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ধরনের ব্যবসা করার জন্য ৪ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়া হবে। ঋণের বিপরীতে থাকবে গ্রেস পিরিয়ড। ঋণ পাবে ২ থেকে ৫ লাখ টাকা। বিশেষ করে কৃষি খামার, মাঝারি ধরনের কৃষিনির্ভর শিল্প, মুরগির খামার, মৎস্য চাষ, বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট, সৌর জ্বালানি, তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর উদ্যোগ, একটি বাড়ি একটি খামার, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প, গরু মোটাতাজাকরণ, দুগ্ধ উৎপাদনকারী খামার প্রকল্পে ঋণ দেয়া হবে।
এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান বেগম শামছুন নাহার বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীরা দ্রুত যাতে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়ে বিকল্প কর্মসংস্থান গড়ে তুলতে পারেন সে জন্যই এ ঋণ দেয়া হবে। সহজ শর্তে ও স্বল্প জামানতে তারা ঋণ পাবেন। ঋণ পরিশোধ পদ্ধতিও সহজ করা হবে। যাতে ব্যবসা করতে তাদের ওপর বাড়তি কোনো চাপ না পড়ে। প্রাথমিকভাবে ঋণের পরিমাণ ধরা হয়েছে ২ থেকে ৫ লাখ টাকা। পরবর্তীতে ব্যবসা ভালো হলে প্রয়োজনে আরও বেশি ঋণও নিতে পারবেন। তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে ব্যাংকের নিজস্ব তহবিল থেকেই এই ঋণ কর্মসূচি আগামী রোববার থেকে শুরু হবে। ইতোমধ্যে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে ২০০ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। সরকার থেকে ৫০০ কোটি টাকা এখনও ছাড় হয়নি। তবে অচিরেই হবে বলে আশাবাদী।
সূত্র জানায়, করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বিভিন্ন দেশ থেকে ৬ লাখের বেশি বাংলাদেশি দেশে ফিরে এসেছেন। তাদের অনেকেই বেকার। এদের কর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমেও ঋণ দেয়া হবে। এজন্য পিকেএসএফ থেকে সহযোগী সংস্থাগুলোকে অচিরেই নির্দেশনা দেয়া হবে। বিশেষ ক্ষুদ্র ও মাঝারি আয় সঞ্চারী উদ্যোগে এসব ঋণ দেয়া হবে। এদিকে করোনার প্রভাব কেটে গেলে যেসব প্রবাসী বিদেশ থেকে এসেছেন তারা যাতে আবার বিদেশে যেতে পারেন সেজন্যও ঋণ দেয়া হবে। এছাড়া নতুন করে যাতে চাকরি নিয়ে বিদেশে যেতে পারেন সেজন্যও দেয়া হবে ঋণ। ইতোমধ্যে বিদেশে যাওয়ার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক বিশেষ ঋণ কর্মসূচি চালু করেছে। এ খাতে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ দেয়া হয়। ঋণের পরিমাণ আড়াই থেকে ৩ লাখ। ঋণের মেয়াদ ১ থেকে ৩ বছর।