লাইফ ষ্টাইল ডেস্ক : ভ্যাপসা গরমের পর বর্ষায় হাফ ছেড়ে বাঁচে মানুষ৷ স্বস্তিদায়ক বর্ষা আসাতে স্বভাবতই খুশি মনে থাকে সবাই৷ কিন্তু চুলের হাল একদমই ভালো থাকে না৷ এ সময়ই চুলে বিভিন্নরকম সমস্যা দেখা দেয় সবচেয়ে বেশি চুল ওঠে ও, বর্ষায় চুল নিয়ে বিপত্তিতে আছেন! মাথায় চিরুনি দিলেই চুলে ভরে যাচ্ছে। মনে হচ্ছে আর কয়েক দিন গেলেই মাথা খালি হয়ে যাবে। আজকের শহুরে জীবনে এটাই বড় চ্যালেঞ্জ। কিছু টিপস বা উপায় মেনে চললেই এড়াতে পারেন এই সমস্যা। আপনার চুল আপনার মাথাতেই থাকবে।
এবার জেনে নিন কি করতে হবে আপনাকে –
বৃষ্টিতে ভিজলেই আবার গোসল
বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে থাকে বায়ুমণ্ডলের ধূলিকণা ও অন্যান্য দূষিত পদার্থ। তাই বৃষ্টিতে ভিজলে আবার চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। নইলে স্ক্যাল্পে জমে যাবে ওই ধূলিকণা। এর ফলে চুলের গোড়া আলগা হয়ে চুল পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে। তাই হাল্কা কোনও শ্যাম্পু দিয়ে ভাল করে চুল ধুয়ে মাথা পরিষ্কার করে মুছে নিন। এর পর স্ক্যাল্পে দিন লেবুর রস। তাতে ধূলিকণা বেরিয়ে যাবে।
মাথা ঢেকে রাখুন
বাইরে বের হলেই মাথা ঢেকে রাখুন। বর্ষার আর্দ্রতা থেকে বাঁচবে চুল। মানানসই রঙিন টুপি বা স্কার্ফ ব্যবহার করুন। ফলে এক ঢিলে দুই পাখি। চুলও বাঁচল, ফ্যাশনও হলো।
ভেজা চুলে চিরুনি নয়
এই নিয়ম মনে রাখতে হবে সারাবছরই। তবে বর্ষায় ভাল করে চুল শুকিয়ে তবেই চুল আঁচড়াবেন। জট ছাড়াবার জন্য ব্যবহার করুন মোটা দাঁতের চিরুনি। ভিজা চুল আঁচড়ালে তা আরও ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। অবশ্যই ব্যবহার করুন নিজের চিরুনি। কারণ বর্ষায় অন্যের চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ালে বিপদের আশঙ্কা আরও বেশি।
গরম তেলের মালিশ
বর্ষার জন্য বেছে নিন উষ্ণ তেল। ভাল করে তা মালিশ করুন স্ক্যাল্পে। বর্ষার আর্দ্রতায় চুলে যে জট পড়ে, তার হাত থেকে রেহাই পাবেন অনেকটাই। স্ক্যাল্পে তেল ফিরিয়ে আনবে চুলের হারিয়ে যাওয়া জেল্লা। চুল মজবুত তো হবেই। সেই সঙ্গে মসৃণও হবে। তেলতেলে হয়ে যাওয়ার ভয়ে বর্ষায় তেল থেকে দূরে থাকবেন না। বরং তেল মালিশের পরে শ্যাম্পু করে নিবেন। চুল থাকবে ঝরঝরে।
কন্ডিশনার দিতে ভুলবেন না
শ্যাম্পুর পরে ভাল করে চুলে কন্ডিশনার দিন। বেশি করে কন্ডিশনিং-এর প্রলেপ থাকুক চুলের ডগায়। যতটা মন দিয়ে চুলে কন্ডিশনার দেবেন, ততটাই যত্ন নিয়ে তা চুল থেকে ধুয়েও ফেলবেন। নয় তো হিতে বিপরীত। এখন অনেক এক্সপার্ট বলেন, বেশি তৈলাক্ত চুল হলে শ্যাম্পুর আগে ভিজে চুলে কন্ডিশনার দিতে। তারপর শ্যাম্পু করে নিলেই চুলের সুস্বাস্থ্য হাতের মুঠোয়।
হেয়ার স্টাইলিং বন্ধ থাকুক
যারা চুলে নিত্যনতুন স্টাইল করেন। বর্ষায় এই স্টাইল বন্ধ রাখুন। এমনিতেই রাসায়নিক ক্ষতি করে চুলের। বর্ষায় সেই ক্ষতির বহর বেড়ে যায়। কারণ ওই রাসায়নিক স্ক্যাল্পে জমে ক্ষতি করে চুলের। তাই বর্জনীয়।
সাদামাটাই হোক স্টাইল
বেশি ঘোরপ্যাঁচের মধ্যে না গিয়ে চুল রাখুন সাধারণ ভাবে। লম্বা চুল হলে ঢিলেঢালা হাতখোঁপা বা বিনুনি থাকুক। মাঝারি চুল হলে পনিটেল। ছোট চুল হলে খোলাই থাকুক। নয়তো বর্ষায় চুল কেটেও ফেলতে পারেন। নতুন স্টাইল হল। আবার চুলের যত্ন নেওয়াও সুবিধাজনক হল।
কেরাটিনের জন্য প্রোটিন
চুল ঝলমলে রাখার জন্য এক ও অদ্বিতীয় হল কেরাটিন। আপনার চুলে যাতে কেরাটিনের অভাব না ঘটে, নজর দিন ডায়েটে। সেখানে যেন প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন থাকে। ডিম, শাক সব্জির সঙ্গে রাখুন ডেয়ারি প্রোডাক্ট, বিনস আর বাদাম। প্রচুর পরিমাণে পানি থাকতেই হবে খাবারের তালিকায়।
মধু আর দুধের মিশ্রণ
স্বাভাবিক চুলের জন্য মধু আর দুধ মিশিয়ে একটি মিশ্রণ করুন। চুলে এই মিশ্রণের মালিশ করার পর আধ ঘণ্টা অপেক্ষা করে ধুয়ে নিন। দুধ থেকে চুল পাবে প্রয়োজনীয় পুষ্টি। আর মধু চুলকে নমনীয় করবে। শুষ্ক চুলের জন্য তেলের কোনও বিকল্প নেই। তেল তো ব্যবহার করবেনই এর সঙ্গে তৈলাক্ত চুলের জন্য বেছে নিতে পারেন অ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারীর রস। এর সঙ্গে মিশিয়ে নিন লেবুর রস। দুটো উপাদান মিশিয়ে চুলে হাল্কা মালিশ করে লাগান। এরপর শ্যাম্পু করে নিন। চুলের তৈলাক্ত ভাব উধাও হয়ে যাবে।