ডেস্ক নিউজ : কাবা শরিফের চারদিকে জড়িয়ে থাকা স্বর্ণখচিত কোরআনিক ক্যালিগ্রাফির কালো গিলাফ প্রতিবছর পরিবর্তন করা হয়। সেই পরিবর্তনের তারিখটি সব সময়ের জন্য নির্ধারিত। প্রতি বছর ৯ জিলহজ তারিখে আরাফার দিন অর্থাৎ হজের দিন কাবাঘরের পুরনো গিলাফ পরিবর্তন করে নতুন গিলাফ লাগানো হয়। তারই ধারাবাহিকতায় এবার পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ বদলানো হবে বৃহস্পতিবার (৯ জিলহজ) এশার নামাজের পর। এ তথ্য জানিয়েছে সৌদি গেজেট ও গালফ নিউজ।
গত ২৪ জুলাই (শুক্রবার) কাবা শরিফের প্রধান তত্ত্বাবধায়ক শায়খ ড. আব্দুর রহমান আস-সুদাইসি এই ঘোষণা দিয়েছেন। এর মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ‘এবার করোনা পরিস্থিতির কারণে পবিত্র কাবার গিলাফ একদিন আগে বদলানো হবে’ এই গুজাবের অবসান হলো।
শায়খ ড. আব্দুর রহমান আস-সুদাইসি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার ১৬০ জন দক্ষ ও প্রশিক্ষিত বিশেষজ্ঞ কারিগর ও প্রযুক্তিবিদ পবিত্র কাবা শরিফের গিলাফ পরিবর্তন করে নতুন গিলাফ পরানোর কাজে অংশগ্রহণ করবেন। প্রতি বছর ৯ জিলহজ এ প্রক্রিয়াটি অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। আর নির্দিষ্ট সংখ্যক শিল্পী বছরব্যাপী একান্ত শ্রম ও প্রচেষ্টায় এ নতুন গিলাফ তৈরি করে থাকেন।
এরই মধ্যে পবিত্র কাবার নতুন গিলাফ হস্তান্তর করা হয়েছে। খাদেমুল হারামাইন শরিফাইন ও সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের পক্ষ থেকে মক্কার গভর্নর প্রিন্স খালিদ আল ফয়সাল কাবা শরিফের জন্য তৈরি করা নতুন গিলাফ কাবার জ্যেষ্ঠ তত্ত্বাবধায়ক শায়খ সালেহ বিন জায়নুল আবেদিনের কাছে হস্তান্তর করেছেন।
জানা যায়, হজের কার্যক্রম সম্পন্ন করার পর হাজিরা নতুন গিলাফে সজ্জিত পবিত্র কাবা শরিফ দেখতে পান। কাবার কিসওয়া তৈরিতে ব্যবহৃত হয় ৬৭০ কেজি খাঁটি সিল্ক। এটি কালো রঙের হয়ে থাকে। গিলাফ তৈরিতে ১২০ কেজি সোনায় মোড়ানো সুতা এবং ১০০ কেজি রূপার সুতা ব্যাবহার করা হয়। এই গিলাফ ৪৭ খণ্ডে বিভক্ত করে কাবার চারদিক আবৃত করে দেয়া হয়।
পবিত্র কাবা শরিফের এই গিলাফ তৈরিতে খরচ হয় প্রায় ৫.৮ মিলিয়ন ডলার। আর পুরোনো গিলাফকে টুকরো টুকরো করে বিভিন্ন দেশের ইসলামিক স্কলার, বিশিষ্ট ব্যক্তি ও রাষ্ট্রপ্রধানদের উপহার হিসেবে দেয়া হয়।
মক্কার নিকটবর্তী উম্মুল জুদ এলাকায় কাবার গিলাফ তৈরির জন্য নির্দিষ্ট একটি কারখানা রয়েছে। যেখানে শ্রমিক সারা বছরই কাবার গিলাফ তৈরির কাজে নিয়োজিত থাকেন।