ডেস্ক নিউজ : মানুষ সৃষ্টির উদ্দেশ্য হচ্ছে আল্লাহর ইবাদত ও তাঁর দাসত্ব। আর দাসত্ব প্রকাশের অন্যতম পন্থা হচ্ছে বেশি বেশি আল্লাহর কাছে দোয়া ও প্রার্থনা করা। এ দোয়ার মাধ্যমে মহাপরাক্রমশালী মালিকের সঙ্গে একজন নগণ্য দাসের সেতুবন্ধ তৈরি হয়। ভালোবাসা ও সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। দোয়া একটি স্বতন্ত্র ইবাদত। অহংকার করে যারা আল্লাহকে ডাকার এ ইবাদত ছেড়ে দেয় তাদের উদ্দেশ্যে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। অহংকারবশত যারা আল্লাহর ইবাদত করে না, তারা লাঞ্ছিত অবস্থায় জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’ (সুরা : মুমিন, আয়াত : ৬০)
তা ছাড়া সাহাবি নোমান বিন বাশির (রা.) এর সূত্রে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘দোয়াই ইবাদত।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১৪৮১)
নিম্নে দোয়া করার বিশেষ কিছু গুরুত্ব ও ফজিলত তুলে ধরা হলো—
দোয়া আল্লাহর অসন্তুষ্টি দূর করে
আল্লাহর কাছে দোয়া না করার অর্থ হলো নিজে স্বনির্ভর—এমন দাবি করা। এটি অনেকটা শিরকের নামান্তর। যারা দোয়া করে না এমন মানুষের প্রতি আল্লাহ খুবই অসন্তুষ্ট হন। আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে আল্লাহকে ডাকে না আল্লাহ তার প্রতি ক্রোধান্বিত হন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৭৩)
ভাগ্যের পরিবর্তন করে দোয়া
মানুষ সৌভাগ্যবান হতে চায়। দুর্ভাগ্য কারো কাঙ্ক্ষিত নয়। তাই ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য মানুষ বহু চেষ্টা করে, দুর্ভাগ্য এড়িয়ে যেতে নানা সতর্কতা অবলম্বন করে। কিন্তু দোয়া ছাড়া অন্য কোনো উপায়ে আল্লাহর নির্ধারিত ভাগ্যলিখন পরিবর্তন সম্ভব নয়। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তাকদিরের বিরুদ্ধে সতর্কতা কোনো কাজেই আসবে না। যা ঘটেছে ও যা ঘটতে পারে—তা থেকে শুধু দোয়াই পারে নিষ্কৃতি দিতে। কোনো কোনো দুর্দশার সঙ্গে মোকাবেলা করে বিচার দিন পর্যন্ত লড়াই করতে থাকে দোয়া।’ (তাবরানি আউসাত, হাদিস : ১৫১৯)
দোয়ার পুরস্কার সুনিশ্চিত
দোয়া কখনো বিফলে যায় না। আল্লাহ কখনো বান্দার দোয়ার মাধ্যমে প্রার্থিত জিনিসটিই দিয়ে দেন, আবার কখনো তা জমা করে রাখেন পরকালের জন্য; কখনো দোয়ার বরকতে বিপদাপদ দূর করে দেন বা অন্য কোনো কল্যাণ দান করেন। তাই দোয়া করতে হবে আশাবাদী হয়ে—নিরাশ বা হতাশ হওয়া যাবে না। হাদিস শরিফে আছে, ‘যখন কোনো মুসলমান দোয়া করে, যদি তার দোয়ায় গুনাহের কাজ কিংবা সম্পর্কচ্ছেদের আবেদন না থাকে, তাহলে আল্লাহ তাআলা তিনটি প্রতিদানের যেকোনো একটি অবশ্যই দান করেন। সঙ্গে সঙ্গে দোয়া কবুল করেন এবং তার কাঙ্ক্ষিত জিনিস দিয়ে দেন। দোয়ার কারণে কোনো অকল্যাণ বা বিপদ থেকে হেফাজত করেন। তার আখিরাতের কল্যাণের জন্য তা জমা করে রাখেন।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ১১১৪৯)
দোয়া কর্মঠ ও সক্ষমতার নিদর্শন
দোয়া খুব সহজ আমল। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পরসহ যেকোনো সময়, যেকোনো অবস্থায় এ ইবাদতটি করা যায়। যারা এ দোয়ার আমল ছেড়ে দেয় নবীজির দৃষ্টিতে তারা অক্ষম ও অলস। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে দোয়া করে না সে সবচেয়ে অক্ষম (অলস)। আর যে সালাম দেয় না সে কৃপণ।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ১৯৩৯)। মহান আল্লাহ আমাদের বেশি বেশি দোয়া করার তাওফিক দান করুন।