আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চিঠি হারিয়ে ফেলেছিল পোস্ট অফিস। তবে তাকে হালকাভাবে না নিয়ে পোস্ট অফিসের বিরুদ্ধে মামলার লড়াই শুরু করেছিলেন ৬৭ বছরের এক বৃদ্ধ। দীর্ঘ ৬ বছরের আইনি লড়াইয়ের পর অবশেষে জয় তারই হয়েছে। ক্ষতিপূরণ হিসেবে পেয়েছেন ৫৫ হাজার টাকা।
ঘটনাটি আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। বেঙ্গালরের কোরামঙ্গলার পঞ্চম ব্লকের বাসিন্দা এল জয়াকুমার ষষ্ঠ ব্লকের পোস্ট অফিস থেকে ২০১৩ সালের ২৯ জুন একটি স্পিড পোস্ট পাঠিয়েছিলেন। সেই চিঠিতে ছিল একটি রেজিস্টার করা উইল আর কলেজের দুটি মার্কশিট। তবে এত গুরুত্বপূর্ণ সেই চিঠি প্রাপকের কাছে পৌঁছায়নি। এই ঘটনায় মূহ্যমান বৃদ্ধ কোরামঙ্গলার পোস্ট মাস্টারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান।
২০১৩ সালের ৭ আগস্ট পোস্ট অফিস থেকে জয়াকুমারকে জানানো হয়, চিঠিটি ভুল করে ইলেকট্রনিক্স সিটির আয়কর দফতরে চলে গিয়েছে। বহুবার চেষ্টা করেও সেই চিঠি ফেরত পাননি ওই বৃদ্ধ। এরই মধ্যে এ বিষয় নিয়ে কাজ করা বন্ধ করে দেয় পোস্ট অফিস কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়ে দেয়, হারিয়ে যাওয়া চিঠি আর খুঁজে পাওয়া সম্ভব নয়।
তবে হাল ছাড়েননি ওই বৃদ্ধ। ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর বেঙ্গালোর ক্রেতা সুরক্ষা দফতরে (বেঙ্গালোর আরবান সেকেন্ট অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট কনজিউমার ডিসপুটস রিড্রেসাল ফোরাম) অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। কোরামঙ্গল পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার, সিনিয়র সুপারিনটেন্ডেন্ট অফ পোস্ট (বেঙ্গালোর দক্ষিণ শাখা) ও বেঙ্গালোর জিপিও’র জেনারেল পোস্ট মাস্টারের কর্তব্যে গাফলতির অভিযোগ আনেন ওই বৃদ্ধ।
‘কর্তব্যে কোনও গাফিলতি হয়নি’ এই বলে মামলাটি বন্ধ করার দাবি জানিয়েছিলেন ডাকবিভাগের অ্যাটর্নি। তার দাবি ছিল, চিঠিটি যে ভুল যায়গায় চলে গিয়েছে তা স্বীকার করে নিলেও পরে তা আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। প্রেরক ওই চিঠিতে যা ছিল বলে দাবি করেছেন তাও মিথ্যা বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এরপর ৬ বছর ৬ মাস ধরে চলা এই মামলা পর্যবেক্ষণের পর ক্রেতা সুরক্ষা বিচারক ডাকবিভাগের ভুল বলেই রায় দিয়েছেন। এর আগে একই ধরনের মামলায় কেরালা ও ওডিশার আদালতও ডাকবিভাগকেই দোষী সাব্যস্ত করেছে বলে জানায় বেঙ্গালোর আদালত। এরপরই জয়াকুমারকে ৫৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয় ডাক বিভাগকে।
রায় প্রদানের ৬০ দিনের মধ্যে মামলার বাদীকে এই অর্থ দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
সূত্র:এই সময়