মঙ্গলবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধু নতুন প্রজন্মের মহানায়ক

ডেস্ক নিউজ : ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট। সপরিবারে হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। তারপর ইতিহাস থেকে তাঁর নাম মুছে দেয়ার অপচেষ্টা চলে দীর্ঘদিন। কিন্তু ইতিহাস চলে তার নিজস্ব পথে। নতুন প্রজন্মের কাছে তাই তিনি আজ মহানায়ক।

ঢাকা সিটি কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র রায়হান শাহরিয়ার সাবিত। তার কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ। যাঁরা সরসরি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের সেই ভাষণ শুনেছেন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান), তাঁদের কেমন অনুভূতি হয়েছিল সাবিত হয়তো তা পুরোপুরি অনুভব বরতে পারছেন না, কিন্তু সে যখনই শোনেন তখনই এক ভিন্ন অনুভূতি হয়। বার বার শোনেন।

সাবিত এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণ পুরো জাতিকে উজ্জীবীত করেছে। স্বাধীনতার জন্য ঐক্যবদ্ধ করেছে। আর এই ভাষণ আমার কাছে এখেনো সমান গুরুত্বপূর্ণ। এই ভাষণ শুনলে আমি স্থির থাকতে পারি না, আমি উজ্জ্বীবিত হই।’

সাবিত মনে করেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) আমাদের মহান নেতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন। স্বাধীনতার জন্য উজ্জ্বীবিত করেছেন। তার গুরুত্ব আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি।’

তিনি আরো জানান, ‘আমরা বইয়ে, আলোচনায় এখন বঙ্গবন্ধুর কথা জানতে পারি। শিক্ষকদের কাছে জানতে পারি। বড়দের কাছে জানতে পারি। আর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে গিয়েও তাঁকে জানা যায়।’

দেশের বিভিন্ন এলাকার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে এটা স্পষ্ট হয় যে, এই প্রজন্ম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে এখন বেশ স্বচ্ছ ধারণা রাখে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং পাঠ্যপুস্তকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানার ব্যবস্থা রয়েছে। পাঠ্য বইয়ে আলাদা অধ্যায় রয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকরা এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা সেশনের আয়োজন করেন।

দশম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাত বিনতে জাহান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের বঙালি জাতির পিতা। তাঁর সবচেয়ে বড় গুণ তিনি আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটাতে বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। তাঁর মধ্যে নেতৃত্ব দেয়ার বিরল গুণাবলী ছিল। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন। এক স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে মুক্তি সংগ্রামী বানিয়েছেন।’

জান্নাত বিনতে জাহানের ভাষায়, ‘বঙ্গবন্ধুর দেশপ্রেম আমাদের জন্য অনুসরণীয়। এটা অনুসরণ করতে পারলে বিশ্বে আমরা মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারব।’

আরেক ছাত্র হাসিবুল্লাহ খান বলেন, ‘একজন ছাত্র হিসেবে বঙ্গবন্ধু আমার কাছে একজন আদর্শ মানুষ৷ তাঁর ব্যক্তিত্ব, আদর্শ, গুণাবলী আমার কাছে অনুসরণীয়। মানুষকে একতাবদ্ধ করার অসাধারণ গুনাবলী তাঁর মধ্যে ছিল। আমি যদি তাঁকে অনুসরণ করি, তাহলে এই গুণাবলী আমার মধ্যেও নিয়ে আসতে পারব।’

হাসিবুল্লাহ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ওপর আমি কবিতা পড়েছি। পঞ্চম শ্রেণির বইয়ে তাঁর ওপর লেখা পড়েছি। স্কুলের লাইব্রেরিতে অনেক বই আছে বঙ্গবন্ধুর ওপর। আমি তা পড়েছি। আর আমাদের শিক্ষকরা ক্লাসেও বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আলোচনা করেন।’

এ শিক্ষার্থী আরো বলেন, ‘আমি মনে করি, প্রত্যেক শ্রেণির পাঠ্য বইতেই বঙ্গবন্ধুর ওপর লেখা থাকা দরকার।’

এই প্রজন্মের খুব বড় একটা অংশের কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একজন দেশ্রপ্রেমিক, আত্মত্যাগী মানুষ। তাঁরা জেনেছেন, বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন, সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছেন। তাঁর আদর্শ, ব্যক্তিত্ব অনুসরণীয়।

সূত্র : ডয়চে ভেলে

এই বিভাগের আরো খবর