ডেস্ক নিউজ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বারবার মৃত্যুর মুখে পড়েছেন; কিন্তু কখনো জাতির যে আকাঙ্ক্ষা, জাতির জন্য তিনি যে কিছু করতে চেয়েছেন, যে জীবন তিনি উৎসর্গ করেছেন, তাঁর আদর্শ সঙ্গে নিয়ে তিনি এগিয়ে গেছেন, কখনো সে আদর্শ থেকে পিছু ফিরে তাকাননি, মৃত্যুকে পরোয়া করেননি।’
১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ রোববার আয়োজিত এক ভার্চুয়াল সভায় এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এ সময় শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘এটা ভাবতেও আমাদের অবাক লাগে, যিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিলেন, মুক্তি এনে দিলেন, আত্মপরিচয়ের সুযোগ দিলেন, জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা এনে দিলেন, তাঁকে হত্যা করা হয়েছিল এ দেশের মাটিতে।’
‘যাদের জন্য তিনি সারাটা জীবন কষ্ট করলেন, যাদের প্রতি জাতির পিতার অগাধ বিশ্বাস ছিল, তাদের মধ্য থেকেই কিছু বিশ্বাসঘাতক নির্মমভাবে তাঁকে হত্যা করল,’ যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
দেশ স্বাধীনের লক্ষ্য ধ্বংস করাই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য ছিল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যে লক্ষ্য নিয়ে এ দেশ স্বাধীন হয়েছিল, সে আদর্শ ও লক্ষ্য ধ্বংস করাই ছিল এ হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য। মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেছিল বাঙালিরা, এটা তারা মানতে পারেনি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানের পাশে ছিল, তারাও বাংলাদেশের বিজয়কে মানতে পারেনি। জাতির পিতাকে হত্যা করাই তাঁদের উদ্দেশ্য ছিল। পাকিস্তানিরা সে উদ্দেশ্য নিয়েই এসেছিল।’
‘তাঁকে যখন গ্রেপ্তার করা হয়, তখন তাঁকে বন্দুকের বাঁট দিয়ে আঘাত করা হচ্ছিল। তারপর তাঁকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানের কারাগারে নিয়ে সেখানে বিচার হয় এবং ফাঁসির রায় দেওয়া হয়। যেহেতু বাঙালিরা জয়ী হয়েছিল, পাকিস্তানের ৯৫ হাজার সামরিক সদস্য বন্দি হয়েছিল, তাঁদের বাঁচানোর উদ্দেশ্যও ছিল পাকিস্তানের,’ বলেন শেখ হাসিনা।
এ সময় ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞতা জানাই ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর প্রতি। তিনি বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য বিশ্বব্যাপী প্রচারণা চালিয়েছেন এবং বন্ধুপ্রতিম দেশ, যারা আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সমর্থন দেয়, তারাও বঙ্গবন্ধুর মুক্তি চেয়েছিল।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘আমি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং যাঁরা শাহাদাত বরণ করেছেন, তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই, যেন আল্লাহতায়ালা তাঁদের সবাইকে বেহেশত নসিব করেন।’