মঙ্গলবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফেরীওয়ালা সেজে অপহৃতা মৌসুমী কে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে ডিবি পুলিশের এসআই রবিউল ইসলাম

আল-ফেরদৌস (রানা),ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার অপহৃত নাবালিকা মেয়ে মৌসুমী আক্তার (১৬)কে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে ঠাকুরগাঁও ডিবি পুলিশের চৌকষ অফিসার এসআই রবিউল ইসলাম।

গতকাল শুক্রবার (০৪ সেপ্টেম্বর) ছদ্মবেশে ফেরীওয়ালা সেজে ঢাকার কদমতলী থানাধীন মহম্মদবাগ এলাকা থেকে
অপহৃতাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন তিনি। অপহৃতা মৌসুমী আক্তার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দক্ষিণ পাড়িয়া গ্রামের সাহাজাত আলীর মেয়ে।

আজ শনিবার (০৫ সেপ্টেম্বর) সকালে অপহৃতাকে ঢাকা থেকে এনে তার ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন করে আদালতে হাজির করা হয়।

এর আগে গত ২৩ জুলাই বাড়ী থেকে কোচিং যাওয়ার পথে অপহৃত হয় মৌসুমী আক্তার। এ ঘটনায় অপহৃতা মৌসুমী আক্তারের মা মোছা: গুলেফা বেগম একই উপজেলার পাড়িয়া গ্রামের শংকর চন্দ্র সাহার ছেলে অমূল্য চন্দ্র সাহা (২৫) ও তার ভাইসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে বালিয়াডাঙ্গী থানায় ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধিত/০৩) এর ৭/৩০ ধারায় গত ২৮ জুলাই একটি মামলা দায়ের করেন।

কিন্তু মামলা দায়েরের এক মাস অতিবাহিত হলেও মামলার কোন অগ্রগতি না হওয়ায় ঠাকুরগাঁও পুলিশ সুপারের নির্দেশে বালিয়াডাঙ্গী থানা হতে মামলাটি জেলা ডিবি পুলিশের উপর হস্তান্তরিত হয়। ডিবি পুলিশের ওসি মো: রফিকুল ইসলাম গত ২৮ আগষ্ট মামলার দায়িত্ব দেন ডিবি পুলিশের এসআই রবিউল ইসলামের উপর।

দায়িত্ব পাওয়া মাত্র আর সময় ক্ষেপন না করে তিনি মোবাইল ট্রাকিং এর মাধ্যমে নিশ্চিত হন অপহরণকারি ঢাকার কদমতলী থানাধীন মহম্মদবাগ এলাকায় অবস্থান করছেন। এরপর তিনি ওই থানাকে অবগত করে সেখানে ফেরীওয়ালার ছদ্মবেশ ধারণ করে অপহরণকারির অবস্থান নিশ্চিত করেন। পরে গতকাল শুক্রবার মহম্মদবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপহৃতা মেয়েটিকে উদ্ধার করতে পারলেও পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় অপহরণকারি অমূল্য চন্দ্র সাহা। পরে মেয়েটিকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁওয়ে নিয়ে আসেন তিনি।

অপহৃতাকে উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে ডিবি পুলিশের ওসি মো: রফিকুল ইসলাম জানান, আমার বিশ্বাস ছিলো এসআই রবিউল এ কাজ করতে পারবে। সে আমার বিশ্বাস রেখেছে, পাশাপাশি ডিবি পুলিশের মুখ উজ্জ্বল করেছে। কেননা থানা পুলিশ যা এক মাসেও পারেনি, ডিবি পুলিশ তা এক সপ্তাহে করে দেখিয়েছে।

এ বিষয়ে এসআই রবিউলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কুল-কিনারাহীন একটা মামলার দায়িত্ব পেয়ে প্রথমে ঘাবড়ে গেছিলাম। পরে অপহৃতাকে উদ্ধারে আল্লাহর নামে ঝাপিয়ে পড়ি। অপহৃতাকে উদ্ধার করতে দুইদিন ছদ্মবেশে ওই এলাকায় ঘোরাফেরা করি। অবশেষে অপহৃতা মেয়েটিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। মেয়েটি মুসলিম এবং ছেলেটি হিন্দু হওয়ায় বিষয়টিকে কেন্দ্র করে এলাকায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-ফেসাদের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিলো। জেলা পুলিশ সুপার স্যারের দূরদর্শিতা ও বিচক্ষণতায় তা রোধ করা সম্ভব হয়েছে এবং অপহৃত মেয়েটিকেও সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হলো।

এই বিভাগের আরো খবর