এম ইসলাম দিলদার, রাজশাহীঃ মানুষের মৃত্যু হয় কিন্তু শিক্ষকেরও কি মৃত্যু হয়? আমার মনে হয় না। ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে, কিন্তু শিক্ষক বেঁচে থাকে তাঁর অগনীত ছাত্র-ছাত্রীদের মনের মাঝে, কর্মের মাঝে, কৃতিত্বের মাঝে, সফলতার মাঝে। শিক্ষক মানে মূলত জীবনের পথ প্রদর্শক, অন্ধকার পথের আলোকবর্তিকা। ঠিক সে অর্থেই আঃমজিদ মন্ডল স্যার ছিলেন অন্ধকারের আলোকবর্তিকাই। বলছি সদ্য প্রয়াত শিক্ষক আব্দুল মজিদ মন্ডল স্যার’র কথা।
কিছু মৃত্যু মানুষকে বাকরুদ্ধ করে দিতে পারে সহজেই। আজকে স্যারের মৃত্যুর খবর পেয়ে নিজেকে সামলে নিতে পারছিলাম না। কষ্ট হচ্ছিল খুব, কারণ অনেকের মত আমিও স্যারের খুব আদরের ছাত্র ছিলাম। পড়াশুনা খুব একটা করতে চাইতাম না। তবুও আমার পরিবারের আর স্যারের সম্পর্ক ছিল খুব বেশি আপন
মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর ) রাত সাড়ে ৩টায় নিজ বাসভবন থেকেই চলে গেলেন না ফেরার দেশে।আমার-আমাদের প্রিয় গুরু, প্রিয় শিক্ষক, প্রিয় অভিভাবক। বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়ের দীর্ঘ প্রায় ৩৫বছর শিক্ষকতা শেষে আবসর গ্রহন করেন আব্দুল মজিদ মন্ডল স্যার।
তাঁর এক ছেলে বাঘা মোজাহার হোসেন মহিলা কলেজের প্রভাষক।তিন মেয়ের মধ্যে ছোট মেয়ে বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে নিয়োগ রয়েছেন।
আল্লাহ স্যারকে জান্নাতি করুন।
স্যারের বাড়ি ছিল বাঘা উপজেলার গড়গড়ি ইউনিয়নের খায়েরহাট গ্রামে । শিক্ষক ও সত্যিকারের এক জন অভিভাবক হিসেবে স্যারকে পেয়েছিলাম আমরা বাঘা উচ্চ বিদ্যালয়ে । শিক্ষার মান উন্নয়ন, শৃঙ্খল শিক্ষালয়ের রূপকার হিসেবে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। স্যার ছিলেন, তবে আমরা তাঁর প্রাপ্য সম্মানটুকুনই যথাযথভাবে দিতে পেরেছি বলে মনে হয়না। আজ আমাদের মাঝে স্যার নেই। আছে, স্যারের স্মৃতি, স্যারের শাসন, স্যারের শিক্ষা।
আমরা জানি প্রত্যেক জীবনকেই মৃত্যুকে বরন করতে হবে। মুত্যু চিরন্তন সত্য। তবে কিছু মৃত্যুর মৃত্যু হয় না, শুধু দেহটাই হয়তো আড়াল হয়। স্যারের মৃত্যুটাও শুধু দেহ থেকে প্রাণ ত্যাগ করেছে। কিন্তু তাঁর কর্ম, তাঁর শিক্ষা, তাঁর আদর্শ দেশে-বিদেশে, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন পদে, বিভিন্ন যায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তাঁর ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে স্মৃতি হয়ে থাকবে। আঃ মজিদ মন্ডল আমাদের স্যার। তিনি এমনই এক জন যাঁকে ভালবাসায়, স্মৃতিতে, স্মরণে, আদর্শে ধারন করেই পথ চলছি, চলবো তাঁর গর্বিত ছাত্র হয়ে। স্যার ভাল থাকুন ওপারে। বিনম্র শ্রদ্ধা…