নিজস্ব প্রতিবেদক: শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন জার্মানি পক্ষ থেকে সভাপতি ইউনুস আলী খান ও সহ-সভাপতি হাকিম টিটু এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এম এইচ রাসেল পৃথক পৃথক বিবৃতি দিয়েছেন।
২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন জার্মানি পক্ষ থেকে সভাপতি ইউনুস আলী খান নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেন :
“মহান শহিদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলা ভাষাভাষীসহ বিশ্বের সকল ভাষা ও সংস্কৃতির জনগণকে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। মহান একুশে ফেব্রুয়ারি বাঙালির জীবনে শোক, শক্তি ও গৌরবের প্রতীক। ১৯৫২ সালের এ দিনে ভাষার মর্যাদা রক্ষা করতে প্রাণ দিয়েছিলেন রফিক, শফিক, সালাম, বরকত ও জব্বারসহ আরও অনেকে। আজকের এ দিনে আমি ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। শ্রদ্ধা জানাই বাংলাভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে নেতৃত্বদানকারী সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং সকল ভাষাসৈনিকের প্রতি।
২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন জার্মানি পক্ষ থেকে সহ সভাপতি হাকিম টিটু নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেন :
‘‘১৯৪৮ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রস্তাবে ছাত্রলীগ, তমদ্দুন মজলিশ ও অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। ১১ মার্চ ১৯৪৮ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সংগ্রাম পরিষদ ধর্মঘট ডাকে। এদিন সচিবালয়ের সামনে থেকে বঙ্গবন্ধুসহ অনেক ছাত্রনেতা গ্রেফতার হন। ১৫ মার্চ তাঁরা মুক্তি পান। ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় অনুষ্ঠিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন শেখ মুজিবুর রহমান। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারাদেশে। ঐ বছরের ১১ সেপ্টেম্বর ফরিদপুরে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৪৯ সালের ২১ জানুয়ারি তিনি মুক্তি পান। ১৯ এপ্রিল আবারও তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জুলাই মাসের শেষে তিনি মুক্তি পান। ১৪ অক্টোবর ঢাকায় বঙ্গবন্ধুকে আবার গ্রেফতার করা হয়। কারাগার থেকেই তাঁর দিকনির্দেশনায় আন্দোলন বেগবান হয়। সেই দুর্বার আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শাসকগোষ্ঠীর জারি করা ১৪৪ ধারা ভাঙতে গিয়ে প্রাণ দিয়েছিলেন ভাষা শহিদরা। মহান একুশে ফেব্রুয়ারির সেই রক্তস্নাত গৌরবের সুর বাংলাদেশের সীমানা ছাড়িয়ে আজ বিশ্বের ১৯৩টি দেশের মানুষের প্রাণে অনুরণিত হয়। ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য কানাডা প্রবাসী সালাম ও রফিকসহ কয়েকজন বাঙালি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে আওয়ামী লীগ সরকার জাতিসংঘে প্রস্তাব উত্থাপন করে। যার ফলে ইউনেস্কো ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। আজ সারাবিশ্বের সকল নাগরিকের সত্য ও ন্যায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রেরণার উৎস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।’’
২১শে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন জার্মানি পক্ষ থেকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এম এইচ রাসেল নিম্নোক্ত বিবৃতি প্রদান করেছেন :
‘আসুন দলমত নির্বিশেষে একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে কাজ করি এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে সমুন্নত রাখি। সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি। প্রতিষ্ঠা করি জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।’
‘‘একুশের পথ ধরেই আমরা স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, লাল-সবুজের পতাকা আর আত্মপরিচয়ের অধিকার অর্জন করেছি। তাই গৌরবোজ্জ্বল, প্রেরণায় মহিমান্বিত আর চেতনা শানিত করারও শক্তি হল একুশে ফেব্রুয়ারি। ফি বছর যখন বসন্ত আসে, কৃষ্ণচূড়ার শাখায় বসে দরাজ কণ্ঠ ছেড়ে কৃষ্ণ-কোকিল গান ধরে, পলাশ-শিমুল রক্তরাগে প্রকৃতিকে রাঙিয়ে ঝিরি ঝিরি দখিনা সমীরণের প্রবাহ ঘটায়, ছুড়ে ফেলে দেয় নির্জীবতাকে, তখনই চেতনায় নাড়া দিয়ে ওঠে যে, এসেছে ফেব্রুয়ারি। তাই তো বসন্তের সম্মিলনে আমাদের চেতনায় আল্পনা এঁকে দেয় অমর একুশে। আসুন, সকল ভেদাভেদ ভুলে একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হই। পবিত্র সংবিধান ও গণতন্ত্র এবং দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রাকে সমুন্নত রাখি। দেশ ও জনগণের ভাগ্যোন্নয়নে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার শপথ নেই। আমি সকল ভাষাশহিদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।”