ডেস্ক নিউজ : আমদানি ও রপ্তানিতে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেখানো কিংবা কমিয়ে দেখানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এ প্রক্রিয়ায় বেশির ভাগ অর্থপাচার হয় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এবার এ ধরনের অপকর্ম ঠেকাতে কঠোর অবস্থান নিতে যাচ্ছে আয়কর বিভাগ। আমদানি ও রপ্তানিতে মিথ্যা ঘোষণা দেওয়া হলে, ঐ পরিমাণ অর্থের পাশাপাশি এর ওপর ৫০ শতাংশ জরিমানা আরোপ করা হবে। আজ বাজেট উপস্থাপনকালে এমন একটি প্রস্তাব দিতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বর্তমানে এ ধরনের অপকর্মের ক্ষেত্রে শুল্ক আইনে জরিমানার কথা বলা থাকলেও আয়কর আইনে কিছু বলা নেই। নতুন এ ব্যবস্থা চালু হলে এ ধরনের অপকর্ম এড়াতে তা বড়ো ধরনের ফল দেবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া স্থানীয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও কেউ মিথ্যা তথ্য দিলে তাকেও ৫০ শতাংশ জরিমানার মুখে পড়তে হবে।
ধরা যাক, কেউ ১ কোটি টাকার পণ্য আমদানির বিপরীতে ৫০ লাখ টাকা দেখিয়েছেন। এটি আন্ডার ইনভয়েসিং হিসেবে পরিচিত। এর মাধ্যমে শুল্ককর ফাঁকি দেওয়া হয়। পরবর্তীতে এনবিআরের পরীক্ষায় তা ধরা পড়লে বাকি ৫০ লাখ টাকা এবং ঐ টাকার ওপর ৫০ শতাংশ হিসেবে আরো ২৫ লাখ টাকা জরিমানা গুণতে হবে। আবার ধরা যাক, কেউ ১ কোটি টাকার পণ্যের আমদানির মূল্য ২ কোটি টাকা দেখিয়েছেন। এর মাধ্যমে তিনি বাড়তি ১ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেন। সাধারণ স্বল্প শুল্ক কিংবা শুল্কবিহীন পণ্য আমদানিতে এ ধরনের কারসাজি করা হয়। এতে তার শুল্কও পরিশোধ করতে হয় না। অন্যদিকে তিনি বিদেশে সরাসরি অর্থপাচার করে দিতে পারেন।
আবার স্থানীয় বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও অনেকে কর ফাঁকি দেওয়া ও অর্থপাচারের লক্ষ্যে প্রকৃত বিনিয়োগের চাইতে বেশি বিনিয়োগ দেখিয়ে থাকেন। বাড়তি দেখানো বিনিয়োগের অর্থ যেহেতু ব্যয়, এ জন্য এর ওপর কর প্রযোজ্য হয় না। ফলে এ প্রক্রিয়ায় অনেক বিনিয়োগকারীর কর ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আবার কেউ যে পরিমাণ বিনিয়োগ দেখিয়ে থাকেন, তার প্রকৃত বিনিয়োগ বেশি। মূলত কালো টাকা এ প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগে আনা হয়। এ ধরনের যে কোনো অনিয়মের ক্ষেত্রে এবার নতুন করে বড়ো অঙ্কের জরিমানা আরোপ করা হচ্ছে। বাজেট প্রস্তুতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, এ ব্যবস্থা কার্যকর হলে মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি-রপ্তানি কিংবা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দেওয়ার প্রবণতা কমতে পারে।