ডেস্ক নিউজ : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার কোনো পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়নি, বরং পাটকলগুলোকে আরো ভালোভাবে চালু করার লক্ষ্যে সংস্কারের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন আদমজী জুটমিলসহ অনেকগুলো পাটকল বন্ধ করে দিয়েছিল। ফলে আদমজী জুটমিলের ৬০ হাজার এবং অন্যান্য পাটকলের লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ’৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর এবং পরবর্তীতে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর দু’বারেই অনেকগুলো করে পাটকল চালু করা হয়েছিল এবং শ্রমিকদেরকে পাটকলের মালিকানায় অংশীদার করা হয়েছিল।
সোমবার সচিবালয়ে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির প্রতি ইঙ্গিত করে ড. হাছান মাহমুদ আরো বলেন, ‘যেকোনো বিষয় ভালো করে পড়ে মন্তব্য করাই হচ্ছে দায়িত্বশীল বিরোধী দলীয় নেতার কাজ, যেটি তারা করতে ব্যর্থ হচ্ছেন।’
প্রসঙ্গত, লোকসানে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর প্রায় ২৫ হাজার স্থায়ী শ্রমিককে অবসরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ২০০৬ সালের শ্রম আইন অনুযায়ী তাদের যাবতীয় পাওনা পরিশোধ করে বিদায় দেয়া হচ্ছে। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সারা দেশের ২৬টি পাটকলে শ্রমিকরা আন্দোলন করছেন। এরই মধ্যে রোববার সচিবালয়ে বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানান।
পাটমন্ত্রী বলেন, পাটকলগুলোতে লোকসান হচ্ছে- এজন্য সরকার চিন্তা করেছে শ্রমিকদের ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেক’ দিয়ে এ খাতকে এগিয়ে নিতে হবে। লোকসানে থাকা পাটকলগুলোকে লাভজনক করার উপায় নিয়ে ছয় মাস ধরে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। ৪০ বছর ধরে আমরা কোনো লাভ করতে পারিনি। সব সময় লোকসান হচ্ছে। সরকার চিন্তা করছে কীভাবে ‘গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের’ মাধ্যমে শ্রমিকদের সব টাকা বুঝিয়ে দিয়ে এ কারখানাগুলোকে আবার চালু করে পাট খাতকে এগিয়ে নেয়া যায়।
জানা গেছে, বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) অধীনে থাকা ২৬টি পাটকলের মধ্যে মনোয়ার জুট মিল বন্ধ রয়েছে। এসব কারখানায় ২৪ হাজার ৮৬৬ জন স্থায়ী শ্রমিকের বাইরে তালিকাভুক্ত ও দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক আছেন প্রায় ২৬ হাজার। বেসরকারি খাতের পাটকলগুলো লাভ দেখাতে পারলেও বিজেএমসির আওতাধীন মিলগুলো বছরের পর বছর লোকসান করে যাচ্ছে; যার পেছনে অব্যবস্থাপনা, অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে।