ডেস্ক নিউজ : হাসপাতালে ভর্তি না করার কারণে যেসব রোগী মারা যাচ্ছেন তাদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে করোনা সংক্রান্ত রোগী ভর্তি না করার বিষয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য পুলিশের একটি পৃথক হটলাইন চালুর বিষয়ে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। আবেদনে যেসব হাসপাতাল বা ক্লিনিক রোগী ভর্তির বিষয়ে সরকারি নির্দেশনা লংঘন করবে তাদের লাইসেন্স বাতিল করার বিষয়ে নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের কর্নফুলী থানার মৃত হাজী মোহাম্মদ হোসাইনের ছেলে হেলালউদ্দিনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইয়াদিয়া জামান আজ রবিবার এ আবেদন করেছেন। রোগী ভর্তি না করা এবং অতিরিক্ত বিল নেওয়ার অভিযোগে ‘৩০ মিনিটে সাতদিনের অক্সিজেন বিল! অরাজকতার এ শুধু খণ্ডচিত্র’ শিরোনামে গত ২৭ জুন কালের কণ্ঠ পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও এবিষয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়। ঢাকা ও চট্টগামের তিনটি বেসরকারি হাসপাতালের পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গত ২৯ জুন করা রিট আবেদনের সম্পূরক হিসেবে এ আবেদন করা হয়েছে।
হেলাল উদ্দিনের করা আবেদনে বলা হয়, তার পিতা হাজী মোহাম্মদ হোসাইনের অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে গত ২ জুলাই সকাল সাড়ে সাতটার সময় চট্ট্রগামের পাঁচলাইশ থানার কাঠালগঞ্জ রোড়ের পার্ক ভিউ হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালটির জরুরি বিভাগ থেকে তাকে অষ্টমতলায় সিসিইউতে ভর্তি করতে বলা হয়। কিন্তু ওই ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা চতুর্থতলার ইউনিটে ভর্তি করতে বলেন। চতুর্থতলায় গেলে তাকে আবার অষ্টমতলায় যেতে বলা হয়। এবার অষ্টম তলায় দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আমরা আশংকা করছি রোগীর করোনা হয়েছে। তাই এবিষয়ে পরীক্ষার নসদ ছাড়া ভর্তি করা যাবে না। রিট আবেদনে বলা হয়, এসময় করোনার হয়নি মর্মে সনদ (নেগেটিভ) দেখানোর পরও রোগী ভর্তি করেনি। এভাবে দেড়ঘণ্টা কেটে যায়। এ অবস্থায় সকাল ৯টায় তার পিতা মারা যান।
এ ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় মামলা করতে গেলে থানা থেকে লিখিত অভিযোগ দাখিল করতে বলা হয়। পরদিন ৩ জুলাই লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় গেলে বলা হয় ওসি সাহেব না আসলে অভিযোগ নেওয়া যাবে না। থানায় ৫ ঘণ্টা বসে থাকার পরও ওসি সাহেব না আসায় সেদিন অভিযোগ নেয়নি পুলিশ। পরদিন ৪ জুলাই থানায় গেলে ওসি সাহেব অভিযোগ না নিয়ে বলেন, এবিষয়ে সিভিল সার্জন তদন্ত করছেন। সিভিল সার্জনের রিপোর্ট পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি সিভিল সার্জন বা পুলিশ। এরআগে ফেনীর দাগনভুঁইয়ার জাঙ্গালীয়া গ্রামের মৃত তফাজ্জল হোসেনের ছেলে জেবুল হোসেন রয়েল গত ২৯ জুন মূল রিট আবেদনটি করেছিলেন। এই রিট আবেদনে ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতাল, চট্টগ্রামের নিজাম রোডের মেট্রোপলিটন হাসপাতাল ও মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালের পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আরজি জানানো হয়। ওই তিনটি হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে রোগীর চিকিৎসা না করে ফেরত দেওয়া এবং অতিরিক্ত বিল আদায়ের ঘটনায় বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করা হয়।