মঙ্গলবার, ১লা অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিঃস্বার্থ মানুষ বাঘার আঃ হান্নান

এম ইসলাম দিলদার, বাঘা প্রতিনিধি, রাজশাহীঃ রাজশাহী জেলার বাঘা উপজেলা পরিষদের দক্ষিনে জন্ম হয় নিঃস্বার্থ মানুষ আব্দুল হান্নান সরকারের। সমাজ, মানুষ, দেশ ও জাতির কল্যাণে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে নিজ উদ্যোগে এগিয়ে আসে বেশকিছু মানবতার ফেরিওয়ালা । তারা কখনো ভাবেনা নিজের প্রয়োজনের কথা, তাদের মনে শুধু দেশ ও জাতির উন্নয়নের স্বপ্ন। ঠিক তেমনি একজন ব্যক্তি রাজশাহীর বাঘা উপজেলার এ্যাডভোকেট আব্দুল হান্নান সরকার।

বাঘা পৌরসভার দক্ষিন মিলিক বাঘা ( পন্ডিত পাড়া) গ্রামে ১৯৩৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। এ্যাডভোকেট আব্দুল হান্নান সরকারের পিতা মরহুম শাহাদতুল্লাহ সরকারের তৃতীয় ছেলে তিনি।
বয়স ৮৩’বছর হলেও এখনো বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হননি তিনি। মাত্র ১৫ বছর বয়সে ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। এর পরে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাঁড়া দিয়ে অংশ গ্রহন করেছিলেন( ১৯৭১) সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে।
রাজনৈতিক কোন পদ পদবীতে না থেকেও কাজ করছেন সমাজভিত্তিক উন্নয়নে। দীর্ঘ বছর ধরে বাঘার ঐতিহাসিক শাহী মসজিদের সেক্রেটারি ও মাজার কমিটির অন্যতম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এ্যাডভোকেট আব্দুল হান্নান সরকার । বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ব্যাপারে তার ভূমিকা প্রশংসনীয়।

এলাকার শিক্ষা শিক্ষানুরাগীদের নিয়ে বাঘা সদরে গড়ে তোলা সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের, উচ্চ-শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করার জন্য উৎসাহ যুগিয়ে যাচ্ছেন তিনি । ১৯৮২ সালে বাঘার প্রাণ কেন্দ্রে উপজেলা প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি সমাজভিত্তিক কর্মভাবনার আরেকটি অগ্রগতি।

১৯৬৬ সালে বাঘা উচ্চ বিদ্যালয় ও ১৯৭২ সালে শাহদৌলা কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়। উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক মসলেম উদ্দীন আর কলেজটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ তফির উদ্দীন। ওয়াকফ এষ্টেটের মোতয়াল্লী মরহুম মনিরুল ইসলামের দানকৃত সম্পত্তিতে প্রতিষ্ঠিত সেই কলেজটি বর্তমান সরকার ( বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ) সরকারি করণ করেছেন। বাঘা উপজেলার এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সরকারি করণের দাবি ছিল দীর্ঘদিনের এলাকাবাসীর৷ বাংলাদেশ সরকারের সফল পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী রাজশাহী – ৬ ( বাঘা-চারঘাট) আলহাজ্ব মোঃ শাহরিয়ার আলমের প্রচেষ্টায় সফল হয়।

এলাকাবাসীরা জানান, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা প্রায় সময়ই তাকে দেখা যায় মাজার ও মসজিদ প্রাঙ্গণে।উন্নয়ন ও মানবিক কার্যক্রমে এলাকায় সাধারনত তাকে নিঃসার্থ কর্মবীর হিসেবে শ্রদ্ধা করেন।

আব্দুল হান্নান বলেন, ছাত্রজীবনে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে ও বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাঁড়া দিয়ে অংশ গ্রহন করেছিলেন মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে। তারপরে ১৯৭৪ সালে ‘ল’পাশ করে আইনজিবী পেশায় নিজেকে নিয়োজিত করেন তিনি।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দীন লাভলু বলেন, আব্দুল হান্নান সরকার শুধু স্বপ্ন দেখেনি না , স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আজীবন নিবেদিত থাকা একটি বিরল বিষয়।

বাঘা পৌর মেয়র আব্দুর রাজ্জাক বলেন , আব্দুল হান্নান সরকার নিজের জন্য কোনদিন কোন কিছুয় চাহিদা করেন না। তার সকল চাওয়া পাওয়া এলাকার উন্নয়ন কল্পে। আমি ব্যক্তিগত ভাবে তাকে শ্রদ্ধা করি। শ্রদ্ধার চেয়েও ভালোবাসি বেশি।

বাঘা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম বাবুল বলেন, আমাদের সমাজ জীবিত থাকতে কাউকে মূল্যায়ন করে না। তা সে যত ভালো কাজই করুক। আমরা চাই আব্দুল হান্নানের জীবদ্দশায় তার প্রাপ্য সম্মানটুকু যেন আমরা দিতে পারি।ও আমি তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।

এই বিভাগের আরো খবর