আন্তর্জাতিক ডেস্ক : চীন থেকে ছড়িয়ে পড়ার ১১৬ দিনে প্রাণঘাতি করোনায় মৃত্যু হয়েছে প্রায় ২ লাখ মানুষের। এখনও নিয়ন্ত্রণের বাইরে ভাইরাসটি। যেখানে প্রতিনিয়ত চেহারা পরিবর্তন করছে, আঘাত হানছে নতুন কোন দেশ কিংবা অঞ্চলে।
এতে করে প্রতিদিনিই দীর্ঘ হচ্ছে স্বজন হারাদের মিছিল। উৎপত্তিস্থল চীন রক্ষা পেলেও ইউরোপ থেকে মধ্যপ্রাচ্য, আমেরিকা থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় ছেয়ে গেছে করোনাক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। যার সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ দেখছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের প্রথম সারির কয়েকটি দেশ।
আজ শনিবার বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনার আঘাতে আরও সাড়ে ৬ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এতে করে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৯১ জনে পৌঁছেছে। আর গত একদিনে রেকর্ড সংখ্যক ১ লাখ ১২ হাজারের বেশি মানুষ ভাইরাসটির কবলে পড়েছেন। বর্তমানে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৮ লাখ ২৮ হাজার ৬১৭ জন। আর এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন প্রায় ৮ লাখ মানুষ।
করোনার সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ দেখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৩ হাজার মানুষ মারা গেছে। সংক্রমণের শিকার হয়েছে ৮ লাখ ৭০ হাজার মানুষ।
তবে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সংখ্যার দিক থেকে অন্য সব দেশকে ছাড়িয়ে গেলেও, যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যুহার এখনো অনেক ইউরোপীয় দেশের তুলনায় কম। এতে এমন অনেক মৃতের সংখ্যা যুক্ত করা হয়েছে, যা এ ভাইরাসের কারণেই কিনা তা নিশ্চিত নয়। ভাইরাসে মৃত্যু হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে- এমন ঘটনাগুলোকেও গণনায় নেয়ায় মৃতের সংখ্যা হঠাৎ করে বেড়ে গেছে।
সংক্রমণের তুলনায় সুস্থ হওয়ার হার অনেক কম। করোনা মহামারি বন্ধে ৪৮৪ বিলিয়ন ডলারের ত্রাণ সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। এ নিয়ে করোনার মোকাবিলায় চতুর্থবারের মতো এমন বিল পাশ করলো দেশটি। খবর বিবিসি’র।
করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর মিছিলে হাবুডুবু খাচ্ছে ইউরোপীয়রাও। স্পেনে সাড়ে ২২ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যেখানে আক্রান্ত ২ লাখ প্রায় ২০ হাজার। স্প্যানিশদের থেকে আক্রান্তে কিছুটা পিছিয়ে থাকলেও প্রাণহানিতে যুক্তরাষ্ট্রের পরই প্রতিবেশী ইতালি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২৬ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে, সংক্রমিতের সংখ্যা ১ লাখ ৯৩ হাজারের কাছাকাছি।
ইউরোপের আরেক দেশ ফ্রান্সেও থেমে নেই আক্রান্ত ও মৃত্যুর মিছিল। ১ লাখ প্রায় ৬০ হাজার আক্রান্তের বিপরীতে মারা গেছেন প্রায় ২২ হাজার ২৪৫ জন মানুষ। যুক্তরাজ্যে প্রাণহানি ঘটেছে ১৯ হাজার ৫০৬ জনের। আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ সাড়ে ৪৩ হাজার জন।
আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারতে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৭৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। যেখানে আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ৪৪৭ জনে। ভারতের পরই চিরশত্রু পাকিস্তান। যেখানে প্রায় ১২ হাজার মানুষ আক্রান্তের বিপরীতে মারা গেছেন ২৫৩ জন।
আর বাংলাদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যানুযায়ী শুক্রবার (২৪ এপ্রিল) পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৬৮৯ জন। মারা গেছেন ১৩১ জন।