ডেস্কনিউজঃ জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের এমপি বলেছেন, ১৯৯০ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্র ক্ষমতা ছেড়ে দেবার পরে দেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। আমি বিশেষজ্ঞ নই, তবুও আমার মনে হয়েছে আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে এতে সংসদীয় গণতন্ত্রের নামে সংসদীয় স্বৈরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। সংসদীয় এক নায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। রাষ্ট্র ক্ষমতা একজনের হাতে কেন্দ্রীভূত হয়েছে। তিনি বলেন, গণতন্ত্র সুসংহত করতে এবং আগামী প্রজন্মের জন্য এখনই এ ব্যাপারে চিন্তা করতে হবে।
শনিবার কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়ায় একটি কমিউনিটি সেন্টারে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রথম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে উপজেলা জাতীয় পার্টি আয়োজিত আলোচনা সভা ও ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জিএম কাদের এসব কথা বলেন।
হাজী রমজান ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গাঁ এমপি বলেন, ’৯৬ সালে জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ ২১ বছর পরে ক্ষমতায় এসেছে। আমরা জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করেছি। কিন্তু তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগ কর্মীরা জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীদের সাথে খারাপ আচরণ করছে, এটা দুঃখজনক।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর সিকদার লোটন, যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল আহসান শাহজাদা, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মঞ্জুরুল হোসেন মঞ্জু, যুগ্ম কোষাধ্যক্ষ অ্যাডভোকেট আবু তৈয়ব, যুগ্ম দফতর সম্পাদক মাহমুদ আলম, কেন্দ্রীয় সদস্য হাজী লিটন, এম. মহিবুর রহমান, ইউসুফ আলী লস্কর, ছাত্র সমাজ সভাপতি ইব্রাহিম খান জুয়েল, ছাত্র সমাজের সহ সভাপতি জামাল হোসেন।
এদিকে, একই দিন রূপগঞ্জের কাঞ্চন-তিনশফিট এলাকায় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুবার্ষিকীর আরেক অনুষ্ঠানে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, দিন যত অতিবাহিত হবে জনগণ পল্লীবন্ধু এরশাদের অবদানের কথা বেশি করে স্মরণ করবে। এরশাদ ঘুমন্ত বাংলাকে উন্নয়ন চাবুক মেরে জাগ্রত করেছিলেন। জাতীয় পার্টির শাসনামলে কোনো দলীয়করণ ছিলো না। মেধাকে মূল্যায়ন করা হতো। স্বাধীনতার পর এদেশে যত উন্নয়ন হয়েছে তার সিংহভাগই হয়েছে এরশাদ শাসনামলে।
জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সাইফুল ইসলামের আয়োজনে মীর আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাপার মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙা। আরো বক্তব্য রাখেন পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, উপদেষ্টা মনিরুল ইসলাম মিলন, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মাসুদুর রহমান মাসুম, জহিরুল ইসলাম মিন্টু, মাহমুদ আলম, ডা. আব্দুল্লাহ ফাত্তাহ, জাতীয় ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক মো. আল মামুন, জাতীয় যুব সংহতির কেন্দ্রীয় নেতা মো. জিল্লুর রহমান প্রমুখ।
জিএম কাদের বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ কোটি মানুষের জন্য কল্যাণময় কাজ করলেও কিছু সুবিধাভোগী মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন। সুবিধাভোগীরাই এরশাদের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছিলেন। সুবিধাভোগী গোষ্ঠীর অপপ্রচার ও কুৎসা রটনাকালেও ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালের দুঃসময়ে জেলে থেকে ৫টি করে আসনে নির্বাচিত হয়ে অনন্য রেকর্ড করেছেন।
স্মরণসভা শেষে এরশাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়। পরে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।