ডেস্ক নিউজ : করোনাভাইরাসের প্রভাবে বিনোদনকেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় প্রতি মাসে ৪৫ কোটি টাকার লোকসান হচ্ছে বলে জানিয়েছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এতে কাজ হারানোর ঝুঁকিতে আছে কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। দুটি ঈদ মূলত তাঁদের আয়ের মৌসুম। করোনার কারণে রোজার ঈদে পার্কগুলো বন্ধ ছিল। এখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব কিছু চালু হলেও ঈদ উপলক্ষে বিনোদন পার্কগুলো খোলা নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছেন পার্ক মালিকরা। কোরবানির ঈদেও যদি পার্কগুলো বন্ধ থাকে তাহলে হুমকির মুখে পড়ে যাবে এই খাত। তাই প্রতিষ্ঠানগুলো টিকিয়ে রাখতে পর্যটন ও বিনোদন পার্কগুলো খুলে দেওয়ার জন্য পর্যটন মন্ত্রণালয়ে ও জেলা প্রশাসকদের চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব অ্যামিউজমেন্ট পার্কস অ্যান্ড অ্যাট্রাকশন (বাপা)।
জানা যায়, দুটি ঈদ ও বছরের প্রথম কয়েকটা মাস বেশি জনসমাগম হয় দেশের বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্রগুলোতে। এই সময় শিক্ষা সফরসহ বিভিন্ন সংগঠনের মিলনমেলায় মুখরিত থাকে স্থানগুলো। তাই ব্যবসার জন্য এটিকে ভরা মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করেন পার্ক ও বিনোদনকেন্দ্রের মালিকরা। কিন্তু নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে হুমকির মুখে পড়েছে এই খাতটি। করোনার কারণে গত ১৮ মার্চ থেকে ফ্যান্টাসি কিংডম, ওয়াটার কিংডম, ফয়’স লেক, সি ওয়ার্ল্ড, ড্রিম হলিডে পার্ক ও শিশু মেলাসহ বন্ধ রয়েছে দেশের সরকারি ও বেসরকারিসহ সব বিনোদনকেন্দ্রই। তাই এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে কর্মীদের বেতনসহ প্রতিষ্ঠানের খরচ চালানো কঠিন হবে বলেও জানান খাতসংশ্লিষ্টরা।
বাপা থেকে জানানো হয়, করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের প্রায় ১০০ বিনোদন পার্ক চার মাস ধরে বন্ধ। এতে আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি বেকার হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন কয়েক হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। পার্কগুলো বন্ধ থাকায় প্রতি মাসে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ৪৫ কোটি টাকা। ঈদের আগে ঢাকার বিনোদন পার্কগুলো খোলার বিষয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসকের স্টাফ অফিসার ম্যাজিস্ট্রেট এম জামাল হোসেন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিনোদন পার্কগুলো খোলার ব্যাপারে আমরা কাজ করছি, আশা করি খুব দ্রুতই একটি ফলাফল জানাতে পারব।’
এদিকে নরসিংদীর ড্রিম হলিডে কর্তৃপক্ষ জানায়, ‘ড্রিম হলিডে পার্ক ঈদের দিন (১ আগস্ট) থেকে খোলার মৌখিকভাবে অনুমতি দিয়েছেন নরসিংদীর জেলা প্রশাসক।’
বাপার সমন্বয়ক এবং কনকর্ড এন্টারটেইনমেন্টের নির্বাহী পরিচালক (মার্কেটিং) অনুপ কুমার সরকার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘করোনায় আমাদের প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। পার্কের যে রাইডগুলো রয়েছে এগুলো রানিং না থাকলে ড্যামেজ হয়ে যায়। এখন যেহেতু দেশের সব কিছু সীমিত পরিসরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে, তাই আমরাও সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের পার্কগুলো ঈদের আগে খুলতে চাই। পার্কগুলোতে বড় আয় হয়ে থাকে দুটি ঈদে। গত রোজার ঈদে আমরা কোনো আয় করতে পারিনি। কোরবানির ঈদেও যদি আয় না করতে পারি এ খাত হুমকির মুখে পড়ে যাবে। হাজার হাজার কর্মচারী চাকরি হারাবে। সে কারণে আমাদের পার্ক মালিক সমিতির পক্ষ থেকে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের কাছে চিঠি দিয়েছি। পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আমাদের জানানো হয়েছে, পার্ক খুলতে তাদের কোনো অসুবিধা নেই, তবে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক চাইলেই পার্কগুলো খুলে দিতে পারেন।’
পরে আমরা জেলা প্রশাসকের কাছেও চিঠি দিয়েছি; কিন্তু এখন পর্যন্ত অনুমতি পাইনি। আমরা পার্কগুলো খুলতে পারলে একটু হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারব।