ডেস্ক নিউজ : কৃতজ্ঞতা মুমিনের ভূষণ। কেউ উপকার করলে তার কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা ইসলামের শিক্ষা। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না, সে আল্লাহর প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে না।’ অথবা ‘যে ব্যক্তি মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞ নয়, সে আল্লাহর প্রতিও অকৃতজ্ঞ।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮১১) আর মহান আল্লাহ অকৃতজ্ঞদের পছন্দ করেন না। এ কারণেই রাসুল (সা.) তাঁর প্রিয় উম্মতদের কৃতজ্ঞতা শিক্ষা দিয়েছেন। কারো দ্বারা উপকৃত হলে তার উপকার করার প্রতি জোর তাগিদ দিয়েছেন। কমপক্ষে উপকারীর জন্য দোয়া করার শিক্ষা দিয়েছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি তোমাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করে তোমরা তার উত্তম প্রতিদান দাও। প্রতিদান দেওয়ার মতো কিছু না পেলে তার জন্য দোয়া করতে থাকো, যতক্ষণ না তোমরা অনুধাবন করতে পারো যে তোমরা তার প্রতিদান দিতে পেরেছ। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬৭২)
পবিত্র কোরআনেও উত্তম প্রতিদান দেওয়ার প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘উত্তম কাজের (ইহসানের) প্রতিদান উত্তম পুরস্কার (ইহসান) ছাড়া কী হতে পারে?’ (সুরা : আর রহমান, আয়াত : ৬০) অতএব কারো দ্বারা উপকৃত হলে আমাদের উচিত উপকারকারীকে পুরস্কৃত করা, তার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা। তার উপকার করার সামর্থ্য না থাকলে কমপক্ষে তার জন্য দোয়া করা। উসামা ইবনে জায়দ (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, কাউকে অনুগ্রহ করা হলে সে যদি অনুগ্রহকারীকে বলে—‘জাজাকাল্লাহু খাইরান’ (আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদান দিন), তাহলে সে উপযুক্ত ও পরিপূর্ণ প্রশংসা করল। (তিরমিজি, হাদিস : ২০৩৫)
আমাদের সমাজে উপকারকারীকে ধন্যবাদ জানানোর প্রথা আছে। কেউ বাংলায় ‘ধন্যবাদ’ বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, কেউ ইংরেজিতে ‘থ্যাংক ইউ’ বলে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। এতে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ হয়ে গেলেও উপকারকারীর জন্য দোয়া হয় না। অথচ উপকারকারীর জন্য রাসুল (সা.)-এর ভাষায় দোয়া করাই বেশি ফজিলতপূর্ণ। এর বরকতে মহান আল্লাহ যদি নিজ হাতে তাকে পুরস্কৃত করেন, তবে এর চেয়ে বড় প্রতিদান আর কী হতে পারে? তাই আমরা কারো দ্বারা উপকৃত হলে, বিপদ ও সংকটের সময় কাউকে কাছে পেলে তার কৃতজ্ঞতাস্বরূপ তার জন্য রাসুল (সা.)-এর ভাষায় ‘জাজাকাল্লাহ’ বলে দোয়া করা উচিত। এতে একদিকে তাঁর কৃতজ্ঞতা আদায় হবে, অন্যদিকে নিজেদের মধ্যে আন্তরিকতাও বাড়বে। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে তাঁর বিধান মেনে চলার তাওফিক দান করুন।