ডেস্ক নিউজ : করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ডাক্তারের সঙ্কট কাটাতে ৩৯তম বিশেষ বিসিএস থেকে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের কার্যক্রম শুরু করেছে সরকারি কর্ম কমিশন-পিএসসি। দ্রুত নিয়োগ কার্যক্রম শেষ করতে আজ মঙ্গলবার কমিশনে এক বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সরকার এবং পিএসসি উভয়ই মনে করছে দেশের এই ক্রান্তিকালে দ্রুততার সঙ্গে ডাক্তার নিয়োগ দিতে হলে ৩৯তম বিশেষ বিসিএস থেকেই দিতে হবে। কারণ এই বিশেষ বিসিএস সদ্যই শেষ হয়েছে। নতুন বিসিএস এর আয়োজন করতে হলে দীর্ঘ সময় লেগে যাবে। যেখান থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত ডাক্তারদের সংকটকালীন মুহূর্তে কাজে লাগানো সম্ভব নয়।
বৈঠক শেষে কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক কালের কণ্ঠকে বলেন, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে আমাদের কাছে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। চাহিদাপত্রে ৩৯তম বিসিএস এর কথা উল্লেখ রয়েছে। আমরাও চিন্তা করে দেখেছি, দ্রুততার সঙ্গে নিয়োগ দিতে হলে ৩৯তম বিশেষ বিসিএস এর বিকল্প নেই। বিষয়টি নিয়ে আজ আমরা একটি বিশেষ সভা করেছি। চেষ্টা করছি দ্রুততার সঙ্গে সুপারিশের কাজ শেষ করতে।
পিএসসি সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে ১০ এপ্রিল ৩৯তম বিশেষ বিসিএসের আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়, শেষ হয় ৩০ এপ্রিল। পরে ওই বছরের ৩ আগস্ট এই বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়, এতে ৩৭ হাজার ৫৮৩ জন অংশ নেন। পরীক্ষায় পাস করেন মোট ১৩ হাজার ৭৫০ জন চিকিৎসক। এর মধ্যে সহকারী সার্জন পদে ১৩ হাজার ২১৯ চিকিৎসক ও ৫৩১ জন সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে উত্তীর্ণ হন।
এই বিশেষ বিসিএস থেকে ৪ হাজার ৭৯২ জন চিকিৎসককে ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এই ৩৯তম বিসিএসে উত্তীর্ণ কিন্তু সুপারিশপ্রাপ্ত নন এমন ৮ হাজার ৩৬০ জনকে নন ক্যাডার পদের জন্য উত্তীর্ণ বলে ঘোষণা করে পিএসসি। পরে তাদের মধ্য থেকে ৫৬৪ জনকে গত ফেব্রুয়ারিতে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। যাদের মধ্য থেকে ৫৩৫ জনকে সম্প্রতি মেডিক্যাল অফিসার হিসেবে নিয়োগের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ।
পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে ননক্যাডারে সুপারিশ পাওয়ারা চাচ্ছেন নতুন করে যে ২ হাজার চিকিৎসক নেওয়া হবে সেখানে যেতে। তাদের দাবি, বিশেষ বিসিএসে নন–ক্যাডারের যে তালিকা প্রকাশ হয়েছিল সেই তালিকার ওপরের দিকেই তাদের অবস্থান। তাই তারা আগে নিয়োগ পেয়েছেন। যেহেতু তখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে নন-ক্যাডার কোনো পদ ছিল না তাই মেধাতালিকা অনুসারে তাদের অন্য অধিদপ্তরে সুপারিশ করা হয়। তাই স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে পদ খালি থাকলে মেধা তালিকার ভিত্তিতে তারাই তা পাওয়া যোগ্য। তারা চিকিৎসক হিসেবে স্বাস্থ্য বিভাগের অধীনে যেতে চান। এক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার থাকা উচিত। বিষয়টি নিয়ে কিছুটা জটিলতা সৃষ্টি সৃষ্টি হওয়ায় আজকের পিএসসির বৈঠকেও তা আলোচনা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে পিএসসি চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিক কালের কণ্ঠকে বলেন, আমরা এমন কিছু করব না যাতে কেউ বঞ্চিত হন। পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে যারা নিয়োগের সুপারিশ পেয়েছেন তাদের বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে। খুব দ্রুতই আমরা নতুন দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সুপারিশের কাজ শেষ করবো।