আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একটি গোপন নথি সম্প্রতি প্রকাশ পেয়েছে। নথিটি ২০১৮ সালের। তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রশিক্ষিত জনবলের ঘাটতির কারণে চীনের উহান শহরের ইন্সটিটিউট অব ভাইরোলজি গবেষণাগার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সেখানে নিযুক্ত মার্কিন দূতবাসের কর্মকর্তারা। পরবর্তীতে ওই শহর থেকেই করোনার প্রাদুর্ভাব হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ফাঁস করা গোপন নথিতে এ বিতর্ক নতুন করে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। প্রথম নথিটি ১৯ জানুয়ারি, ২০১৮ সালে প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ২০১৮ সালে গবেষণাগারটি পরিদর্শন শেষে তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এই উচ্চ-নিয়ন্ত্রণের গবেষণাগারটি নিরাপদে পরিচালনার জন্য সেখানে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষিত প্রযুক্তিবিদ ও তদন্তকারীদের মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওই নথির তথ্য অনুযায়ী, ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাসের মেডিক্যাল শাখা গ্যালভেস্টনে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠিত বিএসএল-৪ ল্যাব রয়েছে এবং উহান ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যাদের সংযোগ রয়েছে। তারা উহানের ল্যাবকে প্রযুক্তিগত ও প্রশিক্ষণ সহযোগিতা দিয়ে থাকে। নথিটি আংশিকভাবে প্রকাশ পেয়েছে, যে অংশটি প্রকাশ করা হয়েছে সেটিতে মূলত সার্স ভাইরাসটির উৎস সম্পর্কে গবেষণার বিসয়বস্তু নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। সেই গোপন নথিতে অভিযোগ করা হয়েছে, বাদুড়ের শরীর থেকে পাওয়া সার্সের মতো বিভিন্ন ধরনের করোনাভাইরাস নিয়ে কাজ করার অনুমতি থাকলেও উহানের গবেষণাগারে বিজ্ঞানীরা মানুষের শরীরে সংক্রমণ ঘটাতে পারে এমন ধরনের সার্স করোনাভাইরাস নিয়ে কাজ করছেন।
নথিতে আরো বলা হয়েছে, গবেষণাটি দৃঢ়ভাবে পরামর্শ দেয় যে বাদুড় থেকে সার্স-জাতীয় করোনাভাইরাসগুলো মানুষের মানুষের মধ্যে সংক্রামিত হতে পারে এবং এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে মানব-প্রাণীর ইন্টারফেসের গবেষণা ভবিষ্যতের উদীয়মান করোনাভাইরাসকে প্রতিরোধ ও প্রাদুর্ভাবের পূর্বাভাস দিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। দ্বিতীয় নথিটি ১৯ এপ্রিল, ২০১৮ তারিখে প্রকাশ করা হয়। সেখানে ল্যাবটির কাজ সম্পর্কে আরো সুনির্দিষ্ট বিবরণ এবং মার্চ মাসে মার্কিন দূতাবাসের পরিবেশ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক দূতাবাসের পরামর্শদাতা মার্কিন কনসাল জেনারেল জ্যামি ফস এবং রিক সুইটজার সহ আমেরিকান কর্মকর্তাদের আরো একটি পরিদর্শন নিয়ে বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়েছে।
নথিটিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির ইংরেজি প্রচারপত্রের ভুমিকায় একটি জাতীয় সুরক্ষার কথা তুলে ধরে বলা হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে,’যদি সম্ভাব্য জৈবিক যুদ্ধ বা সন্ত্রাসী আক্রমণ ঘটে তবে জাতীয় জৈব-নিরাপত্তা রক্ষায় চীনের প্রাপ্যতা উন্নয়নের কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া। নথি অনুযায়ী, উহানের গবেষণাগারের যে চিত্র সামনে এসেছে, তাতে করে সেখান থেকেই করোনা ছড়াতে পারে বলে আশঙ্কা জোরালো হচ্ছে। কভিড-১৯ এর জিনোম সিকোয়েন্স প্রাকৃতিক না বলে দাবি অনেকের। এ নিয়ে এখানো গবেষণা চলছে। তবে এটা নিশ্চিত না যে সেখান থেকেই ছড়িয়েছে আবার তা বাতিল করাও যায় না।
সূত্র : ইন্ডিয়া ব্লুমস।