আন্তর্জাতিক ডেস্ক : তুরষ্কের আয়া সোফিয়াকে মসজিদে রুপান্তর করার সিদ্ধান্তে আন্তজার্তিক অঙ্গনের নিন্দাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান। তিনি বলেন তার দেশের সার্বভৌম অধিকার রয়েছে। এর আগেও তিনি আয়া সোফিয়াকে মসজিদ হিসাবে নামকরণের জন্য বারবার আহ্বান জানিয়েছিলেন এবং ২০১৮ সালে আয়া সোফিয়ায় গিয়ে কুরআন থেকে একটি আয়াত তেলাওয়াত করেন।
শনিবার এক ভিডিও কনফারেন্সে এরদোয়ান বলেন, যারা নিজের দেশে ইসলামফোবিয়ার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয় না, তুরস্কের সার্বভৌম অধিকার ব্যবহার করার ইচ্ছাকে তারাই তাকে আক্রমণ করছে। ষষ্ঠ শতকে বাইজেন্টাইন সম্রাট জাস্টিনিয়ানের সময়ে তৈরি করা হয় আয়া সোফিয়া৷ ১৪৫৩ সালে অটোমানরা কনস্টান্টিনোপল জয়ের পর দ্বিতীয় সুলতান মেহমেদ এই ক্যাথিড্রালটিকে মসজিদে রূপান্তর করেন৷ আধুনিক তুরস্কের স্থপতি মুস্তফা কামাল আতাতুর্ক এটিকে জাদুঘরে পরিণত করেন ১৯৩৫ সালে৷ এরপর থেকে তুরষ্কের অসম্প্রদায়ের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল আয়া সোফিয়া। শুক্রবার এক ডিক্রিতে সই করার মাধ্যমে এরদোয়ান আয়া সোফিয়াকে মসজিদ হিসেবে ঘোষণা দেন।
এই সিদ্ধান্তে ইউনেস্কো, যুক্তরাষ্ট্র, গ্রিসসহ বিভিন্ন দেশ প্রতিক্রিয়া ও নিন্দা জানিয়েছে৷ মসজিদে রূপান্তরের বিরোধীতা আগে থেকে করে আসছিল অর্থডক্স খ্রিস্টানরা৷ তুরস্কের সঙ্গে গ্রিসের সম্পর্কের আরেক দফা অবনতি ঘটারও সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে এ কারণে৷ দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিতসোটাকিস এরদোয়ানের সিদ্ধান্তটির কড়া নিন্দা জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, যারা আয়া সোফিয়াকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অপরিহার্য হিসেবে বিবেচনা করেন এটি তাদের সবার জন্যই ক্ষোভের৷ এই সিদ্ধান্তে শুধু গ্রিসের সঙ্গে নয়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইউনেস্কো এবং গোটা বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে তুরস্কের সম্পর্কে প্রভাব ফেলব।
রাশিয়ার সংসদের উচ্চ কক্ষের উপ-প্রধান ভ্লাদিমির জাবারোভ তুরস্ক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছে উল্লেখ করে বলেন, এটিকে মসজিদে রূপান্তর মুসলিম বিশ্বের জন্য কোন কিছু বয়ে আনবে না, এর মাধ্যমে দেশগুলোর কোন ঐক্য তৈরি হবে না, বরং উলটো দিকে তাদের সংঘাতের পথে ঠেলে দিল৷ তুরস্কের এই সিদ্ধান্তকে হতাশামূলক বলছে যুক্তরাষ্ট্র৷ দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, তুরস্কের সরকার আয়া সোফিয়াকে সব দর্শানার্থীর জন্য উন্মুক্ত রাখার কথা বলেছে৷ সেখানে কারো প্রবেশেই যাতে বাধা তৈরি না হয় সে বিষয়ে কি করা হবে যুক্তরাষ্ট্র সেই পরিকল্পনা জানার অপেক্ষায় আছে৷ এর আগে গত সপ্তাহে তুরস্ককে এমন সিদ্ধান্ত না নেয়ার আহবান জানিয়েছিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।