আন্তর্জাতিক ডেস্ক : নেপালের সঙ্গে ভারতের চলমান টানাপোড়েনের মধ্যেই উত্তেজনা আরো বাড়ল দুই দেশের সীমান্তে। গতকাল রোববার আবারও ভারতীয়দের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর অভিযোগ উঠেছে নেপাল পুলিশের বিরুদ্ধে। গুলিতে এক ভারতীয় যুবক গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। গত এক মাসের মধ্যে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকদের ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ উঠল নেপাল পুলিশের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় পুলিশ সুপারকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, গতকাল রোববার বিকেলে ভারতের বিহার রাজ্যের কিষানগঞ্জে সীমান্ত এলাকায় তিনজন ভারতীয়কে লক্ষ্য করে গুলি চালায় নেপালের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে এক ব্যক্তির শরীরে গুলি এসে লাগে। জিতেন্দ্র সিংহ নামের ২৫ বছরের ওই যুবককে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
জানা গেছে, জিতেন্দ্র ও তাঁর দুই বন্ধু অঙ্কিত কুমার সিংহ ও গুলশান কুমার সিংহ গতকাল রোববার গ্রামের বাইরে গরু খুঁজছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, এ সময় নেপালের পুলিশ আচমকা গুলি চালাতে শুরু করে। এতে গুরুতর জখম হন জিতেন্দ্র। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাঁকে স্থানীয় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাঁকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তেই সংশ্লিষ্ট এলাকায় তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। কিষানগঞ্জের পুলিশ সুপার কুমার আশিস জানিয়েছেন, ঘটনাটির তদন্ত চলছে।
এর আগে গত ১২ জুন ভারত-নেপাল সীমান্তে বিহারের সীতামারিতে নেপাল পুলিশের গুলিতে এক ভারতীয় কৃষক প্রাণ হারান। এ ছাড়া আহত হয়েছিলেন আরো দুজন ভারতীয় নাগরিক। সীমান্তের কাছে খামারে কাজ করছিলেন তাঁরা। সে সময় সীমান্তের ওপার থেকে গুলি চালানো হয়েছিল বলে স্থানীয়রা জানিয়েছিলেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান বিকেশ রাই (২৫) নামের এক যুবক। আহত অবস্থায় উমেশ রাম ও উদয় ঠাকুর নামের আরো দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।
ওই ঘটনার এক মাসের মধ্যে এবার কিষানগঞ্জে ভারত-নেপাল সীমান্তে ভারতীয়দের ওপর নেপাল পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনায় গোটা এলাকা উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা ঘটনাস্থলে গেছেন।
সম্প্রতি নানা ইস্যুতে ভারত বিরোধিতায় মুখর হতে দেখা গেছে নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলিকে। মানচিত্র বিতর্ক, অযোধ্যা নেপালে অবস্থিত বলে দাবি করা, রামচন্দ্রকে নেপালি বলে দাবি করা ইত্যাদি ইস্যুকে নেপালের এ বর্ষীয়ান কমিউনিস্ট নেতার পরিকল্পনা মাফিক কর্মকাণ্ড বলে মনে করছেন কূটনৈতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, চীনের ইশারাতেই এমন বিতর্কিত কাজ করছেন কেপি শর্মা অলি। এর মধ্যেই গতকাল রোববার বিহারে সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় নাগরিকদের ওপর নেপাল পুলিশের গুলি চালানোর ঘটনা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে করা হয়েছে কি না, তা সময়ই বলে দেবে।