শনিবার, ১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজরাইল কি একা সবার রুহ কবজ করেন?

ডেস্ক নিউজ : অনেকের ধারণা, সব মানুষের রুহ কবজ করেন আজরাইল (আ.)। কিন্তু এই ধারণা সঠিক নয়। রুহ কবজ করার প্রধান দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা হলেন মালাকুল মাউত। কিন্তু তাঁর সহযোগী বহু ফেরেশতা আছেন। তাঁরা মালাকুল মাউতের নির্দেশে এ দায়িত্ব পালন করে থাকেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘বলে দাও, তোমাদের জান কবজের দায়িত্বে নিয়োজিত ফেরেশতা তোমাদের প্রাণ হরণ করবে। অতঃপর তোমরা তোমাদের রবের কাছে ফিরে যাবে।’ (সুরা : সাজদাহ, আয়াত : ৩২)

এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা মাত্র একজন ফেরেশতার কথা বলেছেন। অন্য আয়াতে এসেছে, ‘যারা নিজের প্রতি অবিচার করে, ফেরেশতারা তাদের রুহ কবজ করে বলে, তোমরা কী অবস্থায় ছিলে…?’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ৯৭)

এ আয়াতে রুহ কবজকারী ফেরেশতার ক্ষেত্রে বহুবচন ব্যবহার করা হয়েছে। অনুরূপ বহুবচন ব্যবহৃত হয়েছে সুরা মুহাম্মদের ২৭, সুরা আনআমের ৬১ নম্বর আয়াতসহ আরো একাধিক আয়াতে। এর আলোকে বোঝা যায়, জান কবজকারী মালাকুল মাউতের সঙ্গে বহু ফেরেশতা রয়েছেন। বিষয়টি স্পষ্টভাবে এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, বারা বিন আজেব (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, “…মুমিন বান্দা যখন দুনিয়াকে বিদায় দিয়ে আখিরাতের যাত্রী হতে থাকে, তখন উজ্জ্বল চেহারাবিশিষ্ট একদল ফেরেশতা আসমান থেকে তার কাছে আসেন। যাঁদের চেহারা সূর্যের মতো। তাঁদের সঙ্গে বেহেশতের কাফনসমূহের একটি কাফন থাকে। বেহেশতের সুগন্ধিগুলোর একটি তাঁদের সঙ্গে থাকে। তাঁরা সে ব্যক্তি থেকে দৃষ্টির দূরত্ব পরিমাণ দূরে অবস্থান করেন। এরপর মালাকুল মাউত (মৃত্যুর দায়িত্বপ্রাপ্ত ফেরেশতা) আসেন। তিনি তার মাথার কাছে বসেন এবং বলেন, হে পবিত্র আত্মা! বের হয়ে এসো আল্লাহর ক্ষমা ও সন্তুষ্টির দিকে। রাসুল (সা.) বলেন, তখন তার রুহ বের হয়ে আসে যেমনভাবে মশক থেকে পানি বের হয়ে আসে। তখন মৃত্যুর ফেরেশতা তাকে গ্রহণ করেন এবং এক মুহৃর্তের জন্যও ফেরেশতারা তাকে মৃত্যুর ফেরেশতার হাতে থাকতে দেন না; বরং তাঁরা নিজেরাই তাকে গ্রহণ করেন এবং তাকে ওই কাফনের কাপড় ও ওই সুগন্ধির মাঝে রাখেন। ফলে তার থেকে পৃথিবীর সব সুগন্ধির চেয়ে উত্তম মেশকের সুগন্ধ বের হতে থাকে। রাসুল (সা.) বলেন, তাকে নিয়ে ফেরেশতারা ওপরে উঠতে থাকেন…।’

ইবনুল কাইয়েম (রহ.) ‘ইলামুল মুওয়াক্কিঈন’ নামক কিতাবে (১/২১৪) এবং শাইখ আলবানি (রহ.) কিতাবুল জানাইজে (পৃষ্ঠা নং ১৫৯) এই হাদিসকে সহিহ বলেছেন। এই হাদিস থেকে স্পষ্টভাবে বোঝা যায় যে মালাকুল মাউত তথা প্রাণ হরণের প্রধান দায়িত্বশীল ফেরেশতার সঙ্গে আরো সহযোগী ফেরেশতা রয়েছেন।

(সৌদি আরবের একটি ওয়েবসাইট অবলম্বনে)

এই বিভাগের আরো খবর