আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কোন কিছুতেই থামছে না করোনার তাণ্ডব। প্রতিদিনই রেকর্ড আক্রান্তের সঙ্গে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। যার সংখ্যা ৪ লাখ ১৪ হাজার ছুঁই ছুঁই। আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত হয়েছে আরও সোয়া লাখ মানুষ।
বৈশ্বিক মহামারি ভাইরাসটি মন্দায় ফেলে দিয়েছে বিশ্ব অর্থনীতিকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যা কখনো ঘটেনি। ভয়াবহ এ সংকটের কারণে চলতি বছর বিশ্ব অর্থনীতি ৫ দশমিক ২ শতাংশ সংকুচিত হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
করোনার এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বিপর্যস্ত দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এর আগে ভাইরাসটি তাণ্ডব চালিয়েছে গোটা ইউরোপে। বর্তমানে সেখানে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসলে নতুন হটস্পট হয় লাতিন আমেরিকা। যেখানে পয়ষট্টি হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যাতে চরম বিপর্যয়ের মুখে ব্রাজিল।
ভাল নেই দক্ষিণ এশিয়ার দেশুগুলোও। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ভারতে। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিদিনই রেকর্ড সংক্রমণ ও প্রাণহানি ঘটছে বাংলাদেশেও।
আজ বুধবার বাংলাদেশ সময় সকাল পর্যন্ত বিশ্বখ্যাত জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্যানুযায়ী, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনার শিকার এখন পর্যন্ত ৭৩ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ মানুষ। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত ১ লাখ ২২ হাজার ১৯৮ জন। নতুন করে প্রাণ কেড়েছে ৪ হাজার ৭৬৩ জনের। এ নিয়ে করোনারাঘাতে না ফেরার দেশে বিশ্বের ৪ লাখ ১৩ হাজার ৩ জন মানুষ। আর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৩৬ লাখের বেশি মানুষ।
এর মধ্যে শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই আক্রান্ত ২০ লাখ ৪৫ হাজার ৫৪৯ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রাণ গেছে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৪৮ জনের।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংক্রমণের দেশ ব্রাজিলে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ৭ লাখ ৪২ হাজার ৮৪ জনে পৌঁছেছে। দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ৩৮ হাজার ৪৯৭ জনে ঠেকেছে।
আক্রান্তের তালিকায় তিনে থাকা রাশিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ৪ লাখ ৮৫ হাজার ছাড়িয়েছে। প্রাণহানি ঘটেছে প্রায় ৬ হাজার ১৪২ জনের।
প্রাণহানিতে দ্বিতীয় ও আক্রান্তে চারে থাকা যুক্তরাজ্যে সংক্রমণ ২ লাখ প্রায় সাড়ে ৮৯ হাজারের বেশি। মৃতের সংখ্যা সাড়ে ৪০ হাজার ৮৮৩ জন।
নিয়ন্ত্রণে আসা স্পেনে আক্রান্ত ২ লাখ প্রায় ৮৯ হাজার ছাড়িয়েছে। এর মধ্যে প্রাণহানি ঘটেছে ২৭ হাজার ১৩৬ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায়ও মৃত্যু শূন্য দেশটি।
ইউরোপে প্রথম আঘাত হানা ইতালিতে সংক্রমণ ২ লাখ সাড়ে ৩৫ হাজার ৫৬১ জন। মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৩৪ হাজার ৪৩ জনের।
আক্রান্ত ২ লাখ ছাড়িয়েছে লাতিন আমেরিকার আরেক দেশ পেরুতে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে সংক্রমিতের সংখ্যা ২ লাখ ৪ হাজার ছুঁই ছুঁই। মৃত্যু হয়েছে ৫ হাজার ৭৩৮ জনের। চিলিতে আক্রান্ত ১ লাখ প্রায় ৪৩ হাজার, যেখানে মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ২৮৩ জনের।
লাতিন আমেরিকার আরেক মৃত্যুপুরী দেশ মেক্সিকো। যেখানে আক্রান্ত সোয়া লাখে পৌঁছেছে। প্রাণহানি ঘটেছে এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার ৬৪৯ জনের।
প্রাণহানি কম ও সুস্থতার হার বেশি হলেও সংক্রমণ লাখ ছাড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের ইসালিমক প্রজাতান্ত্রিক দেশ সৌদি আরবে। এখন পর্যন্ত দেশটিতে বসবাসরত ১ লাখ সাড়ে ৮ হাজার মানুষের দেহে চিহ্নিত হয়েছে করোনা। যেখানে প্রাণ গেছে ৭৮৩ জনের। এর মধ্যে ২৬৪ জনই বাংলাদেশি।
দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থায় থাকা ভারতে আক্রান্ত পৌনে ৩ লাখ ছাড়িয়েছে। পরীক্ষা বাড়লে আক্রান্তের সংখ্যা আরও কয়েকগুণ হবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্টে ডোনাল্ড ট্রাম্প।
ভারতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত ২ লাখ ৭৬ হাজার ১৪৬ জন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ৭৫০ জনের।
দক্ষিণ এশিয়ার আরেক দেশ পাকিস্তানেও হু হু করে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। যেখানে গত ২৪ ঘণ্টায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন। এতে করে আক্রান্ত বেড়ে ১ লাখ ১৩ হাজার ৭০২ জনে দাঁড়িয়েছে। নতুন করে ৮৩ জনসহ প্রাণহানি ২ হাজার ২২৫ জনে ঠেকেছে।
এ অঞ্চলের আরেক ভুক্তভোগী বাংলাদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দেয়া তথ্যমতে, গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত করোনার শিকার ৭১ হাজার ৬৭৫ জন। এর মধ্যে না ফেরার দেশে ৯৭৫ জন মানুষ। আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১৫ হাজার ৩৩৭ জন।